অভিযুক্ত খুনি সুজন গ্রেফতার ॥ থানায় প্রেস ব্রিফিং

গত শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে দর্শনা পৌর শহরের ঈশ্বরচন্দ্রপুর বড় মসজিদপাড়ার আসানুল ইসলামের ছেলে জাকির হোসেন (১৯) ও একই পাড়ার আমজাদ আলীর ছেলে সুজন পাপড় ভাজা খাচ্ছিলো। এ সময় জাকির ও সুজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডার ঘটনা ঘটে। এর এক পর্যায়ে সুজনের বাবাকে গলা ছিলা ও কান কালা বলে কটাক্ষ করে জাকির।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুজন দৌড়ে বাড়ি থেকে তার বাবা সহ কয়েকজন ধারালো ছুরি এনে হানা দেয় জাকিরের উপর। এ সময় একইপাড়ার তাহার আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম ঠেকাতে আসলে তার বুকে স্বজোরে ছুরিকাঘাত করে সুজন। সুজনের ছুরিকাঘাতে আরো রক্তাক্ত জখম হন শহিদুলের ছেলে ইলফাজ (২২), ফরিদ (৩৫) ও জাকির (২০)।

আহতদের মধ্যে শহিদুলকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। সুজন, ইলফাজ ও জাকির দর্শনা কলেজ পড়ুয়া ছাত্র। তাদের মধ্যে ছিলো গভীর বন্ধুত্বও। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিনই বিকাল ৩ টার দিকে মারা যান শহিদুল ইসলাম। এ দিকে অবস্থা বেগতিক বুঝে সুজন সহ তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে দিয়েছে গা ঢাকা।

এ ঘটনায় নিহত শহিদুলের মেয়ে আমেনা খাতুন বাদি হয়ে সুজনকে প্রধান আসামী করে ৬ জনের বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলার বাকী আসামীর তালিকায় রয়েছে গফুর মিয়ার ছেলে আমজাদ আলী (৪৫), আমজাদ আলীর ছেলে শামীম হোসেন (২৬), আমজাদ আলীর স্ত্রী গোলেহার খাতুন (৪২) মশিউর রহমান ছোটনের স্ত্রী কাজল (৩০) ও বক্স মন্ডলের ছেলে সোলাইমান (৩৮)।

গত সোমবার রাত সাড়ে ৩ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের নির্দেশে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহব্বুর রহমান রহমান কাজলের নেতৃত্বে, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মাহবুবুর রহমান, ইন্সপেক্টর (অপরেশন) আবু সাঈদ, এসআই সুমন্ত বিশ্বাস, জীবননগর থানার এসআই মেফাউল হাসান এবং এএসআই ইমামুল ইসলাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালান চালান ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর উপজেলার ঘুগরি পান্তাপাড়া ইউনিয়নের মানিকদিহি গ্রামে।

ওই গ্রামের জনৈক ব্যাক্তি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত খুনি সুজনকে। সুজনকে গ্রেফতারের পর করা হয় পুলিশি জিজ্ঞাবাদ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের ঘটনার কথা স্বিকার করেছে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে প্রেস ব্রিফিং দেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম। উপস্থিত ছিলেন সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ সাজিদ হোসেন, দর্শনা থানার ওসি মাহব্বুর রহমান কাজল, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মাহবুবুর রহমান, ইন্সপেক্টর (অপরেশন) আবু সাঈদ, সেকেন্ট অফিসার এসআই আহম্মদ আলী, এসআই আ. রহমান খান, সুমন্ত বিশ্বাস, শিহাব উদ্দিন, মাহমুদুল হাসান মিন্টু, মাজহারুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ প্রমুখ।

এ সময় শহিদুল হত্যাকান্ড সহ সুজনকে গ্রেফতারের ব্যাপারে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। এ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর আবু সাঈদ জানান, গ্রেফতারকৃত সুজনকে আজ বুধবার সোপর্দ করা হতে পারে আদালতে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুজনকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদনও করা হতে পারে।