অভিযোগের তীর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রিয়াজুলের বিরুদ্ধে

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের নাম ভাঙ্গিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে রোগীর খাবার লুটপাট ও রোগীর স্বজনদের সাথে অসৌজন্য আচরন করছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রিয়াজুল আলম।

করোনা সংক্রামনের কারণে রোগীর সংখ্যা কম হলেও প্রতিদিনই ৫০ জনের খাদ্য কাগজ কলমে দেখিয়ে টাকা লুটপাট করছেন। লুটপাটের প্রতিবাদ করায় ইতোমধ্যে তিনজন ডাক্তারকে গাংনী হাসপাতাল ছাড়তে হয়েছে।

এদিকে ডা: রিয়াজুল আলমের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে তার বিচারের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। স্থানীয়রা জানায়, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা চরমে পৌছেছে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রিয়াজুল আলম যোগদানের পর থেকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের নিকট আত্নীয় পরিচয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ডাক্তার নার্স থেকে শুরু করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্য মুলক আচরণ করছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সাথে অসদাচরণ করায় ইতোমধ্যে তিনজন ডাক্তার আমিরুজ্জামান আরেফীন , বুদাদীপ্ত দাস ও শাকিলা আফরোজ হাসপাতাল ছেড়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

এছাড়া সিনিয়র চিকিৎসকদের বাদ দিয়ে জুনিয়র চিকিৎসক সাদিয়াকে আরএমও দায়িত্ব দেওয়ায় শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। সম্প্িরত রোগীর সংখ্য কম থাকলেও প্রতিদিনই ৫০ জনের খাবার দেখিয়ে লুটপাট করা হচ্ছে। গত ১ মাসের রোগী ও খাবারের তথ্য সংগ্রহ করে তদন্ত করলে অনিয়মের বিষয়টি ধরা পড়বে বলে জানান স্থানীয়রা।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী জানান, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রিয়াজুল আলম বিভিন্ন ভুয়া বিল করে লুটপাট করতে সকলকে জিম্মি করার চেষ্টা করছেন। হাসপাতালের একজন কর্মী ভুয়াবিল করতে না চাওয়ায় তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে বদলীর হুমকি দিয়েছেন।

এছাড়া ভুয়া বিল ও অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই বদলী ও পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। যুবলীগ নেতা ও সদ্য বিদায়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও এইচ এম ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক দেলোয়ার হোসেন মিঠু বলেন, মেহেরপুরের সিভিল সার্জনের নির্দেশনা অনুযায়ী তার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সকল তথ্য দিতে গেলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রিয়াজুল আলম তার সাথে অসৌজন্য মুলক আচরণ করেন।

তিনি আরও বলেন ডা: রিয়াজুল আলমের বিরুদ্ধে উঠা অনিয়ম তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। হাসপাতালের ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত একজন বয়স্ক মানুষ সজিনার ডাটা কুড়ানোর অপরাধে তার সাথে অসৌজন্য মুলক আচরন করেন। বয়স্ক ব্যক্তির ছেলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রিয়াজুল আলমের বিচার দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

হাসপাতালের তথ্য চাওয়ায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রিয়াজুল আলম এক সাংবাদিককে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঐ সাংবাদিক। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচার দাবি করেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, করোনা সংক্রমনে কোন পরামর্শ নেওয়ার জন্য গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রিয়াজুল আলমের মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে অপরিচিত নম্বর হওয়ায় ব্লক করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দুপুরে সরকারি কাজ ফেলে রেখে। রোগীদের সেবা দেয়া বাদ দিয়ে হাসপাতালের সামনে জড়ো করেন ঐ কর্মকর্তা।

এদিকে হাসপাতাল ছেড়ে কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী জোট বেঁেধ যেতে না চাইলে বদলীর হুমকি দিয়ে তাদের একত্রিত করা হয়। এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন হাসপাতাল চত্তরে উপস্থিত হয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা বাদ দিয়ে কেন হাসপাতাল চত্তরে জড়ো হয়েছেন তা জানতে চান।

সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, সেবা বাদ দিয়ে একত্রিত হওয়া। সেবা বাদ দিয়ে হাসপাতালের সামনে জড়ো হওয়া ঠিক হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আপনারা ডাক্তার মানুষ আপনাদের এত মাথা গরম কেন।

খুলনার স্থানীয় এক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের ব্যাপক জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নাম ভাঙ্গাতে পারে। তবে যারা মাননীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের নাম ভাঙ্গিয়ে ফায়দা লুটতে চাই তাদের বিরুদ্ধ ইতোপূর্বে ব্যবস্থাও নিয়েছেন তিনি।

ডা: রিয়াজুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রোগীর খাবারে বিষয় স্বাস্থ্য বিভাগ দেখবে এখানে সাংবাদিককে জবাব দিতে হবে কেন? আমার বিরুদ্ধে সংবাদ করিলে আমি মামলা করিবো।

মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীননলেন, বিষয়টি আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সময় দিন।
এবিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান পিএস বলেন কেও আইনের উর্দ্ধে না, অনিয়ম করিলে তার বিচার হবে।

মেপ্র/এমএফআর