আবারও উত্তপ্ত গাংনীর রাজনীতি

আবারও উত্তপ্ত গাংনীর রাজনীতি

বেশকিছুদিন স্বাভাবিক থাকলেও গত সোমবার রাত থেকে গাংনী উপজেলা শহরের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গাংনী উপজেলা শহরের সরকারি মৎস্য হ্যাচারির মধ্যে বিস্ফোরণ ও তিনটি ককটেল উদ্ধারের ঘটনা এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতিসহ দলের সহযোগি সংগঠনের ১১ নেতা কর্মীকে এজাহার নামীয় ও ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এনিয়ে নতুন করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারা ১৫(৩)২৫-৯ তৎসহ ৩/৪/৬ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা নং ৩২, তারিখ ২৯/১১/২০২২ ইং।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি দায়ের করেন মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মো: শাহিদুজ্জামান শিপু।

বিস্ফোরণ ও ককটেল উদ্ধারের পরপরই সোমবার রাতে গাংনী পৌর যুবদলের সভাপতি ও গাংনী পৌর সভার সাবেক প্যানেল মেয়র সাহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে গাংনী থানা পুলিশ।

মামলায় এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও সাহারবাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু (৫০) ও তার ভাই মেহেরপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাজমুল হক (৩৫), গাংনী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আব্দুল মালেক চপল বিশ্বাস (৪২), পৌর যুবদলের সভাপতি সাবেক প্যানেল মেয়র সাহিদুল ইসলাম (৪৫), গাংনী উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক বিপ্লব হোসেন (৩০), পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ডাকু (৪৫), সাবেক ছাত্রদল নেতা গাংনী উপজেলার বানিয়াপুকুর গ্রামের কামরুল ইসলাম (৩৬), সাবেক ছাত্রনেতা ইমন আহমেদ (৩৫), যুবদল নেতা মনিরুজ্জামান মনি (৩৩), যুবদল নেতা কাজল আলী(৩৮) ও যুবদল নেতা মহিলা কলেজ পাড়া এলাকার সুমন ওরফে এ্যাডাম(৩২)।

মামলার ঘটনায় গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, সারা দেশের বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে মানুষের উচ্ছাস ও উপস্থিতি দেখে সরকার আতংকিত। আগামি ১০ ডিসেম্বর ঢাকার মহাসমাবেশকে বাধাগ্রস্থ করতেই সরাকরি দলের নেতা কর্মী ও পুলিশ যৌথভাবে ককটেল উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে। তারা মিথ্যা মামলা, হামলা ও নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম বন্ধ করতে চাই। তাদের এই মিথ্যা নাটক দেশবাসি জানে এবং বোঝে। এভাবে নাটক সাজিয়ে দেশের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখা যাবেনা। তিনি অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আটক যুবদল সভাপতি সাইদুল ইসলামের নি:শার্ত মুক্তি দাবী করেন।

এব্যাপারে মামলার বাদী সাবেক ছাত্রনেতা শাহিদুজ্জামান শিপু বলেন, মিটিং মিছিল ও সমাবেশ করা সব রাজনৈতিক দলের অধিকার আছে। কিন্তু মিটিং মিছিলের আড়ালে বিএনপি যদি সন্ত্রাসীমুলক কর্মকান্ড বা ছাত্রলীগের উপর হামলা করে প্রাণ নাশের চেষ্টা করে। সেটাতো ছেড়ে দেওয়া যাবেনা। তিনি বলেন বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠণের নেতা কর্মীরা সন্ত্রাসী। এর আগেও ছাত্রলীগের মিছিলে তারা হামলা করেছে। আমরা তখন তাদের ছাড় দিয়েছি। কিন্তু গত সোমবার রাতের মিছিলেও সেই পূনার্বৃতি ঘটিয়েছে তারা। ছাত্রলীগের মিছিলে বোমা হামলা করে প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছে। আমিসহ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা তাদের সেই হামলা ব্যার্থ করে দিয়েছে।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক বলেন, একটি বোমার বিকট শব্দে বিস্ফোরণ এবং বোমা উদ্ধারের পরই আমি এ ঘটনার তথ্য জানতে পারি। আমি শুনেছি, মিছিল থেকে বিএনপির ২/৩ টা ছেলেকে ধাওয়াও করেছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। তারা এখন থেকেই বিভিন্ন স্থানে অপকর্ম করে দেশের মানুষকে আতংকিত করতে চাই। সেই ধারাবাহিকতায় তারা ছাত্রলীগের মিছিলে বোমা বা ককটেল হামলা চালাতে পারে। অকারণে কেউ কোনো অকারেন্স করলে সেই দায় তারা স্বীকার করতে চাইনা। তবে, কয়েকদিন অপেক্ষা করলে পুলিশের তদন্তেই বেরিয়ে আসবে আসল ঘটনা।

গত সোমবার (২৮ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৮ টার দিকে গাংনী উপজেলার শহরের পরিত্যক্ত সরকারি মৎস্য খামারের মধ্যে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। পরে গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম পরিত্যক্ত সরকারি মৎস্য হ্যাচারির মধ্যে অভিযান চালিয়ে লালকসটেপ মোড়ানে তিনটি ককটেল উদ্ধার করে। এঘটনার পরপরই পুলিশ এবং নেতা কর্মীরা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মেঘলার বাড়িতে রেড দেন। তবে মকবুল হোসেন মেঘলা ঢাকা থেকে নিজের ফেইসবুকে লাইভ দিয়ে সে ঢাকায় আছে বলেন জানান দেন।