আবেগ দিয়ে নয়, বিবেক দিয়ে দেখুন

“ আপনি বিদেশে থাকেন, লেখক, নিরপেক্ষ দেশপ্রেমিক পরিচয় দেন। আপনার ফেসবুক ওয়ালে দেখি শুধু আওয়ামী সরকার বিরোধিতা, একটিও উন্নয়ন বা সাফল্যের লেখা নেই।

লিখেছেন সরকার উন্নয়ন নিয়ে কটাক্ষ করে, কোথায় চাল চুরি হয়েছে, অতি সুক্ষ অনিয়মগুলোও আপনার বাইনোকুলারে ধরা পড়ে যায়। কই ছিলেন আপনি ২০১০ সালের আগে। তখন কি আপনার বিবেকবোধ মনে হয় মায়ের গর্ভে ছিল। যেই না আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলো, সাথে সাথে আপনার বিবেকবোধ প্রসব করিলো। যা মনে আসে, যা মনে আসে তাই বলে ফেলেন। আবার বলেন বাক স্বাধীনতার কথা।

গ্রামে যান, জিজ্ঞাসা করুন। গ্রামের প্রায় বাড়ীতে মোটরসাইকেল, টিভি ফ্রিজ। মংগা নেই, সার সংকট নেই, সেচ সংকট নেই, প্রতিটি বাড়ীতে বিদ্যুৎ, গ্রামের মানুষ দরজা খুলে ঘুমায়, চোর ডাকাতের উৎপাতের চিন্তায় পাহারা দেয়া লাগে না।

কয়েক বছর আগেও নাইট কোচে ঢাকায় আসতাম। গাবতলি পৌছালে ভোর ৩ টা থেকে গাবতলিতে বসে থাকতে হতো সকাল না হওয়া পর্যন্ত। এখন যখন গাড়ী থেকে নামি তখন বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিই। গাবতলির ৮ নং গাড়ি ছিল পকেটমার আর মলম পার্টির নিয়ন্ত্রনে। এখন কি তা কমে যায় নি?
আগারগাও- মিরপুর তালতলায় রাত ৮ মানে হরহামেশা ছিনতাই। সন্ধ্যার পর মহিলাদের জন্য ছিল একপ্রকার কারফিউ। এখন শুধু ঢাকা না, গ্রামের মানুষরাও গভীর রাত পর্যন্ত চলাফেরা করে। চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেয়।

মতিঝিলে গুলি বোমা মেরে টাকা ছিনতাই হতো না, এমন কোন দিন কি ছিল? এখন কয়দিন এমন ঘটনা শুনতে পান? টিআইবি বলছে, দুর্নীতিতে আগে ছিলাম ১ এখন ১৫,১৭। মানে দুর্নীতিও কমেছে। সূচক পয়েন্ট অনেক ভাল। আপনারা বলছেন, টাকা লুট হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ আমলে। বিএনপির সময় তো হয় নি,

আমার প্রশ্নঃ
তাহলে বিএনপির আমলে কেন নিজ টাকায় পদ্মা সেতু হয় নি, হাতিরঝিল হয় নি, এতোগুলো ফ্লাইওভার হয় নি, বিদ্যুতকেন্দ্র হয় নি, পারমানবিক প্রকল্প হয় নি, মেট্রোরেল হয় নি, নিজস্ব স্যাটেলাইট হয় নি, ১০০ অর্থনৈতিক জোন হয় নি, দুটি নয় একটিও সমুদ্রবন্দর হয় নি, এলএনজি গ্যাস আসে নি? রেল ব্যবস্থায় হাত দেয় নি? সব লুট হলে প্রবৃদ্ধি বাড়ে কিভাবে। দেশের রিজার্ভ এখন কতো জানেন কি?

বলেন কি!
এসব নাকি কালের বিবর্তনে।আমার প্রশ্ন, ২০০১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত কালের বিবর্তনে কোন উন্নয়ন আপনার চোখে পড়েছে। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ যে পরিমান বিদ্যুৎ রেখে গিয়েছিলো, কালের বিবর্তনে তা কমে গেছিলো। দেশ অন্ধকারে ছিল, হারিকেন জ্বালাতেন।

মেগা প্রকল্প বলতে বিএনপির একটা প্রকল্পের নাম কি বলা যাবে?

গড় আয় ১০ বছরে ১০০০ মার্কিন ডলার বেড়ে দাড়িয়েছে ২০০০ মার্কিন ডলার হিসাব আছে? টেন্ডারবাজী রোধে ই-টেন্ডার চালু হয়েছে। আগের টেন্ডারবাজীর চিত্রগুলো কি আবার মনে করিয়ে দিতে হবে? বলবো না এই দেশ রাতারাতি ইউরোপ আমেরিকা হয়ে গেছে, তবুও সরকারী দলের এমপি মন্ত্রী হয়েও জেলে যাওয়ার নজীর সৃস্টি হয়েছে। বুঝতে হবে আমেরিকায় থাকেন, এই দেশের আমরা কিন্তু আমেরিকানদের মতো না। ১০ বছরে দেশ ইউরোপ আমেরিকা বানানো সম্ভব না।

The Rome was not build over night. আমেরিকায় আছেন, ওখান ত্রান পাঠালে ত্রান চূরি হবে কি হবে না তা আর বুঝতে বাকি নাই। প্রকাশ্যে দিনের বেলায় লুটপাট হতে দেখেছি। যা আমার দেশেও হয় না।

সমুদ্রসীমানা আদায়ে, ছিটমহল সমস্যা সমাধানে বিএনপি কি করেছিল? আওয়ামী লীগ করেছে। তথ্য-প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে গেছে দেশ। এক্ষেত্রেও বিশ্বের কাছে রোল মডেল। হাই ওয়েগুলোর দিকে তাকান, পরিবর্তন চোখে পড়ে না? বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটি ছুতে পারি, স্বচক্ষেও দেখতে পারি নি। স্বচক্ষে দেখেছি এটার স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ হাসিনাকে। দেশ যা কল্পনাও করতে পারি নি, হাতিরঝিল প্রকল্প, মেট্রো রেল, পদ্মা সেতু, কর্নফুলী ট্যানেল, বিদ্যুৎ বিপ্লব, পারমাণবিক প্রকল্প, আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর, ই-টেন্ডার প্রক্রিয়া, এলএনজি গ্যাস, আর দুটি সমুদ্র বন্দর, ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল। কল্পনা করেছিলেন শেখ হাসিনা, বাস্তবায়নও করে দেখিয়েছেন।

কেউ কি আমাকে দেখাতে পারবেন, শেখ হাসিনার মতো আর একজন স্বপ্নবাজ ভিশনারী নেতা যা মাথায় এমন একটি মেগা প্রকল্পের চিন্তা এসেছে বা আসতে পারে? সরকারের ক্রটি নেই তা বলা যাবে না তবে অর্জন যা হয়েছে তা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। অন্য দল যা পারে নি তাই পেরেছে আওয়ামী লীগ। বুঝলাম আওয়ামী লীগ খারাপ, বিকল্পের নাম বলুন। সমাধানের কথা বলুন। দোষ ক্রটি, ভাল মন্দ সব নিয়ে লিখুন, তাহলে বলবো আপনি নিরপেক্ষ, না হলে আপনাকে স্বীকার করতে হবে যে আপনিও কোন দলের দলকানা।

লেখক:  সদস্য,প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।