আমেরিকার সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই শক্তির জানান দিচ্ছে ইরান

পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে বেশ কয়েক বছর ধরেই আমেরিকার সঙ্গে উত্তেজনা বিরাজ করছে ইরানের। এই ইস্যুতে ইরানের ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও জারি করে আমেরিকা। এতে উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে। এর মধ্যেই সম্প্রতি ইরানের প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। ইরান ঘোষণা দেয়,পরমাণু কর্মসূচি জোড়দার করার।

আমেরিকার সঙ্গে তুমুল এই উত্তেজনার মধ্যেই এবার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের পরীক্ষা চালিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছে ইরানের এলিট ফোর্স বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)।

শনিবার ভারত মহাসাগরে এ পরীক্ষা চালায় দেশটি।
ইরানের বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, স্থল ও সমুদ্রে নির্দিষ্ট বস্তুতে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের পরীক্ষা চালিয়েছে ইরান। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি চতুর্থবারের বড় সামরিক মহড়া।

দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এক হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূর থেকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে তা ধ্বংস করতে সক্ষম। ইরানের মধ্যাঞ্চল থেকে ছোড়ার পর ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলে অবস্থানরত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে শত্রুর বিমানবাহী রণতরীসহ বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।

‘বর্তমানে সাগরে যুদ্ধের প্রচলিত কৌশলটি হল কম গতিসম্পন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে চলমান লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করা। কিন্তু আমরা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েও সাগরে শত্রুর চলমান নৌযান ধ্বংসের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছি, এমনটাই জানান তিনি আইআরজিসির প্রধান।

গত বুধবার ও বৃহস্পতিবারও ওমান উপসাগরে সামরিক মহড়া চালায় নৌবাহিনী। অপরদিকে সেনাবাহিনীর ড্রোন মহড়া চালানো হয়েছে ৫ ও ৬ জানুয়ারি।

ধারাবাহিক মহড়া ও নতুন নতুন সামরিক সরঞ্জাম সফল পরীক্ষা চালানোর মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছে ইরান।

এদিকে, ইরানের ছোঁড়া দীর্ঘপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিৎজের অবস্থানের ১০০ মাইলের মধ্যে পড়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল ফক্স নিউজ।

মার্কিন একটি অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলটি বলেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ভারত মহাসাগরের যেখানে পড়েছে তার ২০ মাইল দূরে একটি বাণিজ্যিক জাহাজও ছিল।

টেলিভিশনের খবরে দাবি করা হয়েছে, ভারত মহাসাগরের ওই এলাকায় অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে এবং তাতে মারাত্মক রকমের বিস্ফোরণ হয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বিস্ফোরণের পর আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তার টুকরো ছড়িয়ে পড়ে। মার্কিন একজন সরকারি কর্মকর্তা দাবি করেন, “ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হবে বিষয়টি আমরা ধারণা করছিলাম।”