আলমডাঙ্গায় দুই বন্ধু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত, পাশাপাশি দাফন

দুই বন্ধু প্রাইভেট পড়ার নামে বাড়ি থেকে বের হয়ে লাশ হয়ে ফিরলো বাড়িতে। সোমবার সকাল ১১ টার দিকে চুয়াডাঙ্গার ঘোড়ামারা ব্রিজের নিকট মোটরসাইকেল-আলমসাধুর সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়। এতে আহত হয় আরো ৩ জন। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত দুই স্কুল ছাত্র নতিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।

দুই স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। কান্নার আহাজারিতে ভারি হয়ে যায় বাতাস। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত দুই বন্ধু সজিব ও মারুফকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার নতিডাঙ্গা দক্ষিণপাড়া কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

জানাগেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদি ইউনিয়নের নতিডাঙ্গা গ্রামের আকুব্বারের ছেলে মারুফ ও একই গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে সজিব। দুজনই দশম শ্রেণীর ছাত্র ও এসএসসি পরিক্ষার্থী।

সোমবার সকালে দুজন বাড়ি থেকে বের হয় প্রাইভেট পড়ার জন্য। কিন্তু তারা দুজনে মোটরসাইকেল যোগে চুয়াডাঙ্গায় মোবাইল সার্ভিসিং করতে যায়। এসময় ঘোড়ামারা ব্রিজের নিকট পৌছালে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুত গতির আলমসাধু ও মোটরসাইকেল আসায় তারা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আলমসাধু গাড়ির মুখোমুখি ধাক্কা মারে। এতে গুরুত্বর আহত হয় শরিফুল ও সজিব।

আহত হয় জেহালা গ্রামের মৃত ঠান্ডু রহমানের ছেলে আলমসাধু চালক আজমদ্দীন কেসলু, আঠারখাদা গ্রামের বিজয় কুমারের ছেলে তপন কুমার ও সদর উপজেলার কুঁকিয়া চাঁদপুর গ্রামের কুরবান আলীর ছেলে শাহীন। তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের দুই বন্ধুকে মৃত ঘোষণা করে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘোড়ামারা ব্রিজের অদূরে পটলার পীরের মাজার এলাকায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি নছিমনকে ধাক্কা দেয় দুর্ঘটনাকবলিত দুটি মোটরসাইকেল। এ দুর্ঘটনায় তিনটি যানের পাঁচ যাত্রীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নিলে দুজনের মৃত্যু হয়।

নতিডাঙ্গা ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ওবাইদুর রহমান জানান, ময়নাতদন্ত ছাড়াই বিকেলে লাশবাহী গাড়িতে দুজনের মরদেহ নিজ গ্রাম নতিডাঙ্গাতে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তিন ভাইয়ের মধ্যে মারুফ ছোট এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে সজিব ছোট। সন্তানদের হারিয়ে তাদের বাবা-মা যেন পাগল প্রায়। বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তারা। তারা দুজনই সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময় বলেন, হাসপাতালে আনার পর জরুরি বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়। পরে ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু হয়। আহত তিনজন এখনও শঙ্কামুক্ত নয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি যানবাহন পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। অভিযোগ না থাকায় মরদেহ সুতরহাল শেষে বিকেলে দুই পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।