আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে মেহেরপুরের স্থলবন্দর

অবশেষে অলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে স্থলবন্দর আন্দোলন। মেহেরপুর জেলায় একটি স্থলবন্দরের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে মেহেরপুরবাসী।
আর এই আন্দোলনের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন মেহেরপুরের সন্তান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির সদস্য এম এ এস ইমন।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কতৃপক্ষ গত ৩ নভেম্বর একটি প্রস্তাবিত তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রস্তাবিত তালিকায় নতুন করে ২টি স্থানে স্থলবন্দর তৈরি করার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই তালিকায় স্থান পেয়েছে মেহেরপুরের মুজিবনগর ও কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর।  এ দিকে নতুন করে স্থলবন্দর প্রস্তাবিত তালিকায় আসায় মেহেরপুরবাসীর নতুন করে স্বপ্ন দেখছে।

জানা গেছে, ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম এই স্থলবন্দরের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। পরবর্তিতে ২০১৪ সালে গঠন করা হয় মেহেরপুর স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলন ফোরাম। এই ফোরামের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এম এ এস ইমন। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে স্থলবন্দর বাস্তবায়নের কাজকে ত্বরাণিত করে চলেছেন।

এ প্রসঙ্গে এম এ এস ইমন বলেন, মেহেরপুর বাংলাদেশের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক জেলা। এই জেলার মুজিবনগর হচ্ছে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুতিকাগার। অথচ এই জেলায় তেমন কোন শিল্পকারখানা বা বেকার সমস্যা সমাধানের কোন সুব্যাবস্থা নেই। মেহেরপুরের মুজিবনগর প্রতিবেশি দেশ ভারতের কাছাকাছি অবস্থিত। তাই ভারতের সাথে বানিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করা আমাদের জন্য সহজ। এখানে যদি একটি স্থলবন্দর স্থাপন করা হয় তবে সেখানে অনেক বেকার যুবক-যুবতির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেই সাথে মেহেরপুরের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, এই বিষয়টি মাথায় নিয়ে আমরা প্রথমে কয়েকজন যুবককে সাথে নিয়ে স্থলবন্দরের দাবিতে আন্দোলন শুরু করি। পরবর্তিতে ২০১৪ সালে একটি ফোরাম গঠন করি। যার নাম দেওয়া হয় মেহেরপুর স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলন ফেরাম। এই ফোরামের নেতৃত্বে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। আজ আমার খুব ভালো লাগছে যে অবশেষে আমাদের পরিশ্রম, আমাদের সপ্নের স্থলবন্দর বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে। এটি মেহেরপুরবাসীর জন্য খুবই সুসংবাদ। আমরা আশা করবো এই প্রস্তাবিত স্থলবন্দর যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়।

জানা গেছে, স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলন ফোরামের নেতৃত্বে ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, মেহেরপুর জেলায় অনশন ধর্মঘট, বিভিন্ন মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ করা হয়। এ সকল কর্মসূচিতে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। মেহেরপুর স্থলবন্দর আন্দোলনের অন্যতম সদস্য বেলাল হোসেন। স্থলবন্দর প্রস্তাবিত হওয়ার খবরে তিনি বলেন, ইমনের নেতৃত্বে মেহেরপুরবাসীকে সাথে নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছি। অবশেষে সেই আন্দোলনের স্বার্থকতা পেতে যাচ্ছি।

আন্দেলন কারীদের মধ্যে ফরিদ উদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন বলেন, স্থলবন্দর আমাদের কাছে সপ্নের মত। এটা বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে এর চাইতে আনন্দের খবর আর কি হতে পারে?
জাগো মেহেরপুর’র মুখপাত্র শোয়েব রহমান জানান, অবশেষে মেহেরপুরবাসী অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। আমাদের সপ্ন পূরণের পথে।
স্থলবন্দর বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে এমন খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে বইছে আনন্দের বাতাস। বেকার সমস্যা সমাধান সেই সাথে মেহেরপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কার্যকরি সম্ভনা তৈরি হতে যাচ্ছে। সেই সাথে তৈরি হবে ব্যবসার নতুন দিগন্ত।

মেহেরপুর কোর্ট রোডের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, মেহেরপুরে স্থলবন্দর অত্যন্ত জরুরী। এখানকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করবে। এছাড়াও আমাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক ভালো হবে। বিভিন্ন পন্য আমদানি রপ্তানী করে আমরা লাভবান হতে পারবো।

আর আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান বলেন, স্থলবন্দর আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, এটা প্রস্তাবিত হয়েছে শুনে খুব ভালো লাগছে। এলাকার উন্নয়নের জন্য স্থলবন্দর প্রয়োজন। এছাড়াও সাধারণ মানুষ সেখানে বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। চিকিৎসা নিতে যদি ভারতে যেতে হয় তবে খুব সহজেই পাড়ি দিতে পারবে।

জেলা মটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, স্থলবন্দর তৈরি হলে খুব ভালো হবে। আমাদের শ্রমিকদের কাজের অভাবে বসে থাকতে হবে না। তাছাড়া মটর গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রপাতী আমরা খুব সহজেই কম দামে কিনতে পারবো। বিভিন্ন ভারতীয় গাড়ি কম খরচে আনতে পারবো।
-মর্তুজা ফারুক রুপক