ইবির প্রো-ভিসির বিদায় সংবর্ধনায় ভিসি- বিদায় মানে আসলে বিদায় নয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আসদুস সালাম বলেছেন, বিদায় মানে আসলে বিদায় নয়। বরং ফুলেল শুভেচ্ছাসহ তাকে আমরা যেভাবে বিদায়ী অনুষ্ঠানে অলংকরণ করলাম এতে করে ব্যাথিত না হয়ে বরং আনন্দে উদ্বলিত হওয়া উচিৎ।

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সম্মেলন কক্ষে দু’ মেয়াদে প্রো-উপাচার্যের দায়িত্ব সফলভাবে সম্পাদন করায় অধ্যাপক ড. মোঃ শাহিনুর রহমান কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আমি এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধিতে কাজ করতে চাই।সবুজে ঘেরা এই বিশ্ববিদ্যালয় সত্যি গর্বের। এই সুন্দর প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয় করে প্রতিষ্ঠানের শ্রী বৃদ্ধিতে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

অনুষ্ঠানে সভাপতি কলা বিভাগের ডিন ও আয়োজক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মোঃ সরওয়ার মুর্শেদ বলেন, সব পাখি ঘরে ফেরে। তেমনি ড. শাহিনুর রহমান ঘরে ফিরছে। প্রফেসর শাহিনুর রহমানকে আমি ৩৭ বছর ধরে চিনি।শাহীন রহমান যে দক্ষতা দেখিয়েছে সেটি আজ ফিরে এলো ফুলেল শুভেচ্ছা আর ক্রেষ্ট এর মাধ্যমে।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি আসলে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়, সাদরে বরন করার সময় ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হলেও বিদায়বেলায় বিষাদে ভরে থাকে। আয়োজন না থাকায় তাচ্ছিল্য হয়।এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ম্লান হয়, তারা (ভিসি) যখন অনৈতিক কাজ করে, দূর্নীতি করে তার দায়ভার আমাদের উপর বর্তায়।

এই ভিসির আগ্রহে এখানে আজকের প্রো-ভিসির বিদায় অনুষ্ঠানের যে আয়োজন শুরু হলো। এভাবেই এখানকার শিক্ষকদের বিদায় হওয়া উচিত সম্মানের সাথে। সম্মান নিয়ে বিদায় নেওয়াটা মানেই কিন্তু আনন্দের। আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বিদায় দেওয়া উচিত। আসুন আমরা সেই থেকে প্রসস্থ করি, উজ্জল করি। তাই আজকের এই আয়োজনের জন্য ভিসির প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমরা আগামীতে এই ভিসির বিদায়েও যেন ফুলেল শুভেচ্ছার মধ্য দিয়ে বিদায় দিতে পারি।

বিদায়ী প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন, আজকের এ দিনটি আমার জীবনের স্মরণীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বিভিন্ন বিভাগ আমাকে বিদায় জানাতে এসেছেন এটা অভূতপূর্ব। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী সবাই দক্ষ। কেবল তাদের আপনি (ভিসি) গড়ে তুলবেন এবং এ ধারা অব্যাহত থাকে এবং দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে চলতে পারলে এ বিশ্ববিদ্যালয় সম্ভাবনার পথে, সাফল্যের পথে বহুদূর এগিয়ে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, দুই মেয়াদে শেষ হলো আমার দায়িত্ব।আমি আমার ঘরে ছিলাম আমি ঘরেই আছি। আজকের এই বিদায়ের মধ্য দিয়ে কেবল আমার কর্ম পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে। আমার শিক্ষার্থীরা আমার হৃদয়ের প্রাণের স্পন্দন। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আমার মা। আমি ক্লাস নিতে আবার আমার বিভাগে আমি ফিরে যাবো। আপনাদের সাথে ছিলাম আপনাদের সাথেই আছি।

আমি যা করেছি, সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি আমার সহকারী ও শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। আজকের এই দিনে আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের ভিসি আলোকিত এবং বড় মনের মানুষ। আমার বিদায়ী অনুষ্ঠানে এতো সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজন করায় আমি ভিসির কাছে কৃতজ্ঞ।

প্রসঙ্গত, অধ্যাপক ড. মোঃ শাহিনুর রহমান ১৯৯১ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে প্রভাষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন।এরপর ১৯৯৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। তিনি ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ পর্যন্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আবারো ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ তারিখে পুনরায় উপ-উপাচার্য হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন, তিনি আজ অবধি উপ-উপাচার্য হিসাবে কাজ করছেন।

ইংরেজি বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালনসহ ফোকলোর স্টাডিজ ও সোস্যাল ওয়েলফেয়ার বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।