উদ্দেশ্যে প্রণোদিত মেডিক্যাল রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগ

উদ্দেশ্যে প্রণোদিত হয়ে মেডিক্যাল প্রতিবেদন দেওয়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন কাঞ্চন খাতুন (৫৫) নামের এক বয়স্ক নারী। অথচ মাথায় ১৫টি সেলাইয়ের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। উল্টো দিকে কোন ক্ষত না থাকলে বিবাদী পক্ষকে সুবিধা দিতে গুরতর জখমের প্রতিবেদন দিয়েছেন লোপা সাহা নামের এক চিকিৎসক।

অভিযুক্ত লোপা সাহা মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকক্সে ইমার্জেন্সী মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। কিন্তু তাঁর ওই প্রতিবেদনের ফলে ভুক্তভোগী কাঞ্চন খাতুন উপযুক্ত বিচার পাচ্ছেন না। পক্ষান্তওে, বিবাদীর পক্ষে মামলায় তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এ ঘটনায় পুন:প্রতিবেদনের জন্য মেহেরপুর সিভিল সার্জনের কাছে আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী কাঞ্চন খাতুন।

আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিরোধী পক্ষের কাছে টাকা খেয়ে হত্যার উদ্যেশ্যে করা মারাক্তক আঘাত কে সাধারণ ক্ষত বলে মেডিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ করেন। ঘটনাটি ঘটে গত ৩০/০৩/২০২০ ইং তারিখে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চলতি বছরের গত ৩০ মার্চ কাঞ্চন খাতুনের স্বামী আইয়ুব হোসেন ক্রয় জমি দখলের চেষ্টা করছেন তাদের শরিক জামিরুল ইসলাম, গোলাম হোসেন, শফিকুল ইসলাম, শমের আলি, সজিব জমি দখল করে নেওয়ার জন্য বেড়া দিচ্ছেন। এ সময় তিনি বাধা দিলে তাকে হত্যার উদ্যেশ্যে দখল কারীরা হামলা করেন। এতে কাঞ্চন খাতুনসহ তার স্বামী গুরুতর আহত হলে মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ সময় করোনা পরিস্থিতিতে আদালতে বন্ধ থাকায় মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি। পরে ১৪/০৭/২০২০ তারিখে মুজিবনগর থানায় মামলা দায়ের করেন যার সি.আর নং- ৬৫/২০।

মামলার সুরতহালের জন্য মেডিক্যাল রিপোর্ট চাইলে মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. লোপা সাহা সাধারণ ক্ষত উল্লেখ করে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেন। কিন্তু কাঞ্চন খাতুনের মাথায় দুটি ক্ষতস্থানে ১৫ টি সেলাই হয়। তা সত্ত্বেও মেডেক্যাল অফিসার ডা. লোপা সাহা সাধারণ ক্ষত উল্লেখ করে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, উল্টোপক্ষে টাকার বিনিময়ে গুরতর ক্ষতের পরিবর্তে বিরোধী পক্ষের ব্লেডে কাটা একটি সেলাই এবং ১২ বছর আগে দাত ভাঙাটিকে এখনকার বলে চালিয়ে দিয়েছেন।

তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক লোপা সাহা অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কাঞ্চন খাতুনের আইনজীবী আব্দুল আলিম জানান, বিবাদীর পুত্র সন্তান না থাকায় তারা দুই মেয়ের নামে জমি দান করেন। এটা তাদের শরিকরা মেনে নিতে না পেরে জমি দখলে চেষ্টা করেন। বাধা দিলে তারা হামলা চালিয়ে কাঞ্চন ও তার স্বামী আইয়ুবকে রক্তাক্ত জখম করে। যেখানে কাঞ্চনের মাথায় ১৫টি সেলাই হয়। অথচ চিকিৎসক সাধারণ জখম বলে চালিয়ে দেন। কিন্তু বিবাদি পক্ষের সাধারণ ক্ষত হলেও তাদের গুরতর জখম হিসেবে প্রতিবেদন দিয়েছেন।

ফলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের বাদি পক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়। যে কারণে আমরা নারাজি দিয়ে পুনরায় তদেন্তর আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদনের ফলে সিআইডি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মেহেরপুরের সিভিল সার্জন নাসির উদ্দিন জানান, এ সংক্রান্ত একটি আবেদন পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।