করোনাভাইরাসে একদিনে মারা গেলেন ৯৭ জন

বৈশ্বিক আতঙ্কে পরিণত হওয়া করোনাভাইরাস দ্রুতগতিতে মহামারী রূপ নিচ্ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।

প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা তার আগের দিনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

শনিবার একদিনে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয় ৮৯ জন, যা ছিল শুক্রবারের রেকর্ডকে ছাপিয়ে একদিনে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা।

শুক্রবার ৮৬ জন মারা গিয়েছিলেন।

রোববার পেছনের সব সংখ্যাকে ছাড়িয়ে একদিনে মৃত্যুর রেকর্ড সর্বোচ্চ সংখ্যা বসাল এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।

এদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৭ জন। এ নিয়ে চীনে মোট প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়াল ৯০৮ জনে।

দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, করোনাভাইরাসে চীনের মূল ভূখণ্ডেই এ পর্যন্ত ৯০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪০ হাজার ১৭১ জন। এ ছাড়া আরও ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫১৮ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

নতুন করে আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।

স্বাস্থ্য কমিশনের দাবি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩ হাজার ২৮১ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে ভাইরাসটি চীনের সীমান্ত পেরিয়ে ২৮ দেশে সংক্রমিত হয়েছে।

ভাইরাসটির বিস্তারের তালিকায় চীনের পর এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জাপান। সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ৯০ জন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর। সেখানে সর্বশেষ বাংলাদেশিসহ মোট আক্রান্ত হয়েছে ৪৩ জন।

জানা গেছে, চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হংকং ও ফিলিপাইনে মারা গেছেন দুজন। ফিলিপাইনে মৃত্যু হওয়া ওই ব্যক্তি চীনা নাগরিক।

তবে চীনে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের তালিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের নাগরিক রয়েছে।

করোনাভাইরাসে হতাহতের দুই-তৃতীয়াংশ চীনের হুবেইপ্রদেশের। এই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি।

উৎপত্তির ছয় সপ্তাহ পর শনিবারই করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২০০৬-০৭ সালের আতঙ্ক সার্সকে (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) অতিক্রম করেছে।

সার্স সেই সময় বিশ্বের ২৪ দেশে ছড়িয়ে পড়লেও এতে মৃত্যু হয়েছিল সব মিলিয়ে ৭৭৪ জন।

প্রসঙ্গত গত ৩০ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুশিয়ারের পর নতুন করোনাভাইরাস শনাক্ত করে চীন। বিজ্ঞানীরা প্রথম থেকেই ধারণা করে আসছেন যে, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটির হুবেইপ্রদেশের উহান শহরের একটি সি ফুড মার্কেট থেকে ওই ভাইরাস ছড়িয়েছে।

সি ফুডের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীও ওই মার্কেটে বিক্রি হতো, যা পরে বন্ধ করে দেয় চীনা কর্তৃপক্ষ। গোড়ার দিকে সাপ, বাদুড় ও ভোঁদড়ের দিকে ইঙ্গিত ছিল অনেকের।

এখন সেসব প্রাণীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বনরুইয়ের নাম।

তবে বিজ্ঞানীদের আরেকটি অংশের বক্তব্য– করোনাভাইরাস সাপকে পোষক হিসেবে ব্যবহার করে, এমন কোনো প্রমাণ কখনও মেলেনি।

আরো পড়ুন-সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত