করোনার চরম দুর্যোগে পথ দেখাচ্ছেন পেরুর মারিয়া আন্তোনিয়েতা

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দাপটে বিশ্বজুড়েই চলছে লকডাউন। এই লকডাউন চলছে কোনও দেশে আংশিক, আবার কোনও দেশে পুরোদমে। লকডাউনের প্রভাবে চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখে গোটা বিশ্ব। এর প্রভাবে পৃথিবী যখন বিপর্যস্ত, ঠিক সে সময়ে পেরুর অর্থ ও ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মারিয়া আন্তোনিয়েতা আলভা অর্থনৈতিক নতুন কর্মকৌশল নিয়ে স্থিতিশীল অবস্থায় রেখেছেন দেশকে। তার এই কর্মকৌশল পৃথিবীর অনেক দেশেই প্রশংসিত হয়েছে। গণমাধ্যম তাকে হিরো হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

যেভাবে আলোর পথ দেখাচ্ছেন মারিয়া আন্তোনিয়েতা মারিয়া আন্তোনিয়েতা আলভা হারতে শেখেননি। লকডাউনের সময়কার নগদ অর্থ সাহায্যের এই কৌশল নিয়ে অনেক দেশই আগ্রহ দেখিয়েছে। অনেক গণমাধ্যম তাকে হিরো আখ্যা দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। করোনাভাইরাসের হাত থেকে অর্থনীতিকে সচল রাখার কৌশল আলোচনা হচ্ছে। মারিয়া আন্তোনিয়েতা আলভা তার দেশ ও আশপাশের দেশগুলোর অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, কমিটি গড়েছেন। এরপর তিনি তাদের মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা ও ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে সম্মিলিতভাবে কাজ করার পন্থা ঠিক করেছেন। এরপরই নগদ অর্থ বিলি করা শুরু করেছে সরকার। অর্থ ও ব্যবস্থাপনামন্ত্রী বেতন কাঠামোতে সরকারিভাবে ভর্তুকি দিতে, ব্যবসায়ীদের সরকারি ঋণ সাহায্য দানের প্রস্তাব দিয়েছেন। কোনোটিই এর আগে কখনও পেরুর অর্থনীতিতে বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে হেইমে রেইশচে নামের মডি’স ইনভেস্টর সার্ভিসের একজন অর্থনীতি বিশ্লেষক বলেছেন, ‘এগুলো হলো সরকারের ভেতরে মারিয়ার চাপের ফল। পরিষ্কার কথা বলে করোনাভাইরাসের ক্ষতির পরিমাণ জানানো ও সেই ক্ষতিতে সাড়া দেওয়ায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।’

ব্যাপক মহামারীর এ সময়ে তিনি অর্থ ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উচ্চাকাঙ্ক্ষী দিকনির্দেশক অর্থনীতি ও ব্যবস্থাপনা পুনরুদ্ধার প্রকল্পটি নিয়ে এসেছেন। ফলে ছোট ব্যবসায়ী ও একেবারেই সাধারণ মানুষকে উদারতা দেখানোর জন্য তাদের ভালোবাসা পেয়েছেন।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ রিকার্ডো হাউম্যান আরও বললেন, ‘লাতিন একটি দেশের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে পেরু সবার উদাহরণ।’

রিকার্ডো হাউম্যান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মারিয়ার অধ্যাপক ছিলেন। তিনি পেরুসহ করোনাভাইরাসের মহামারীতে আরও ১০টি দেশের অসুবিধাগুলো দূর করার জন্য গড়া বিশেষজ্ঞ দলের অন্যতম সদস্য।

সাত মাস বয়সের প্রিয় মন্ত্রীকে নিয়ে বললেন, ‘পেরুতে মারিয়া না থাকলে খুব ভয়াবহ পরিণতির কথা ভাবতে হতো।’ লকডাউনের শুরু থেকেই যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে সাহায্য নিয়ে পৌঁছাতে চেষ্টা করছেন। তার ওপর বেশির ভাগ মানুষেরই আস্থা আছে। কার্লোস অলিভা নামের সাবেক এক অধ্যাপক বলেছেন, ‘তিনি যোগাযোগে খুব ভালো, যা এই পরিস্থিতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’

তাদের উদ্যোগের অংশ হিসেবে দুই সপ্তাহ আগে পেরু তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বন্ড রেকর্ড কমমূল্যে আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করেছে। অন্যতম কারণ, বিনিয়োগকারীদের মনোবল বাড়ানো।