করোনায় বিপাকে চুয়াডাঙ্গার সাড়ে সাত হাজার গো-খামারী

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে দেড় লাখ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পরেছেন চুয়াডাঙ্গার সাড়ে সাত হাজার খামারী। কোরবানী উপলক্ষে বছর জুড়ে লালন-পালন করা গবাদিপশু, খামারীদের কাছে গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। খুচরা ক্রেতা ও বেপারিদের অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন ছোট-বড় খামারীর। কোরবানীর ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে খামারীদের কপালে দুশ্চিন্তার রেখাও তত স্পষ্ট হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৮ হাজার গরু-মহিষ এবং ৫০ হাজার ছাগল-ভেড়াসহ কোরবানীর পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬৮ হাজার। এর বিপরীতে জেলার সাত হাজার ৩৩৭টি খামারে গবাদিপশু রয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার ২১২টি। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ৮৪৯টি গরু-মহিষ এবং এক লাখ ১১ হাজার ৩৬৩টি ছাগল-ভেড়া রয়েছে।

গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছরই চুয়াডাঙ্গা জেলায় কোরবানীর পশুর চাহিদা অনন্ত পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে হিসেবে এ বছর জেলার খামারীদের পশুর সংখ্যাও বেড়েছে। তবে বিশ^ব্যাপি করোনা পরিস্থিতিতে বদলে গেছে সব হিসাব-নিকাশ। খামারের গবাদিপশু বিক্রি হবে না-কি থেকে খামারে তা নিয়ে দুশ্চিতায় খামারীরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নীলমণিগঞ্জ গ্রামের খামারী আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে কয়েক মাস আগে থেকেই গবাদিপশুর খাবারের দাম বেড়ে যায়। এতে খামারীদের খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে বেপারী ও খুচরা ক্রেতাদের দেখা মিলছে কালে ভদ্রে। সে হিসাবে এখনও চাহিদা মাফিক বেচাকেনা করতে পারেন-নি জেলার খামারীরা।

প্রাণী সম্পদ বিভাগের মতে, স্থানীয় চাহিদার চেয়ে জেলায় অন্তত আশি হাজার গবাদিপশু বেশি রয়েছে। অন্য বছরের মতো এবছর যদি জেলার পশু সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া না যায়, তবে খামারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন ও প্রাণী সম্পদ বিভাগ অনলাইন পশুহাটসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। যাতে করে খামারীরা তাদের গবাদিপশু বিক্রি করতে পারেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এএইচএম শামিমুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে খামারীরা কিছুটা শঙ্কায় রয়েছেন। তবে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ জেলা প্রশাসনের সাথে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে খামারীরা তাদের পালিত গবাদিপশু যথাসময়ে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই বিক্রি করতে পারেন।

এর মধ্যে অনলাইন পশুহাট পরিচালনা ছাড়াও চলমান হাটগুলোতে প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুস্থ পশু বেচাকেনায় সহযোগিতা করা হচ্ছে।