কী ভাবছে ভারত? কাশ্মীর সংকট: পাকিস্তান সফরে আসছেন ট্রাম্প

বুধবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) আলোচনার এক ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তান সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

শিগগিরই পাকিস্তান সফর আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সফরে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিরোধের বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে বলে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কয়েকটি ধারাবাহিক টুইটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দুই দেশের নেতাদের মধ্যে তৃতীয় বৈঠককে তিনি ভালো বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি যোগ করেন, তাদের মধ্যে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়টির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ করে তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের দিকেও মনোযোগ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যকার আলোচনা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের মধ্যে আলোচনা এক ঘণ্টা চলমান ছিল। এ সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে ট্রাম্প ও তার পুরো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট কয়েক দশক ধরে চলতে থাকা বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়টি সমাধান করার সম্মতি দিয়েছেন। ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার বিষয়টি ইমরান খান উত্থাপন করেন। এ সময় ট্রাম্প প্রস্তাব রাখেন জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে বিরোধের বিষয়টি তিনি নিষ্পত্তি করবেন। এ সময় দুই নেতার আলোচনার মধ্যে আফগানিস্তানের বিষয়টিও প্রাধান্য পায়। এ ছাড়া বৈঠকে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এ দিকে সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর ইস্যুটি চীন উত্থাপন করলে ভেটো প্রয়োগ করে নিরাপত্তা পরিষদের বাকি চার দেশ। ওই সময় ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, কাশ্মীর ইস্যুটি দিল্লির অভ্যন্তরীণ বিষয়। পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে চীন নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর ইস্যু তোলায় ইসলামাবাদের কড়া সমালোচনা করে দিল্লি। ভারত প্রথম থেকে এটিকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে দাবি করে আসছে। তারা বলছে, এ নিয়ে অন্য কোনো দেশ হস্তক্ষেপ করুক তারা চান না।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধান থেকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়া হয়। এরপর এ দুটি অঞ্চলকে দুটি রাজ্যে ভাগ করে বিজেপি সরকার। এরপর থেকে কার্যত জম্মু-কাশ্মীর অচল হয়ে পড়ে। উপত্যকা অঞ্চলটিতে হাজার সেনা মোতায়েন করে ভারত সরকার। আটক করা হয় জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রীকে। নির্যাতন করা হয় বিক্ষোভকারীদের। হাজার হাজার স্বাধীনতাকামী মুসলমানকে আটক করা হয়।

এ ঘটানার প্রথম থেকেই পাকিস্তান এর বিরোধিতা করে আসছে। এ নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। দেশ দুটির মধ্যে সীমান্তে কয়েকদফা গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় দেশের বেশকিছু সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এমন উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তান সফরে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্পের সফর নিয়ে ভারত কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

সুত্র- যুগান্তর