খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো ‘বর্ষ’ সফল হবে না: মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়াকে কারান্তরীণ রেখে বাংলাদেশে কোনো ‘বর্ষ’ পালন সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপন করা একটি প্রহসন। কারণ খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। ১৯৭১ সালেও যিনি স্বাধীনতার জন্যই কারাগারে ছিলেন পাকিস্তান বাহিনীর হাতে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি এখনও কারাগারে আছেন। তাকে (খালেদা জিয়া) কারাগারে আটক রেখে কোনো বর্ষই সফল হবে না।

রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর শনিবার সকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম রবিকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব সেখানে যান।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্রের সংগ্রাম, গণতন্ত্রের যুদ্ধ। এটাকে কেন্দ্র করেই দীর্ঘকাল ধরে আমাদের স্বাধীনতার দাবি উঠেছে, স্বাধিকারের আন্দোলন হয়েছে, সংগ্রাম হয়েছে। তারই পরিণতি হিসেবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একাত্তরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে এবং দেশ স্বাধীন হয়েছে। শুধু একজন ব্যক্তি বা একটি গোষ্ঠী বা একটি দল এই স্বাধীনতার দাবিদার হতে পারে না।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারতের এনআরসি-সিএএর পর সম্প্রতি যে দাঙ্গা হয়েছে, তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদির আসাটা কতটুকু সমীচীন-শোভনীয়, এটা তারাই বিচার করবেন।

‘বিএনপি নির্বাচনে সিরিয়াস নয়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অংশ নিচ্ছে’- আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তো কত কথাই বলবে। জনগণের সমর্থন ছাড়া, ম্যান্ডেটবিহীন অবস্থায় শুধু অস্ত্র দিয়ে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। স্বাভাবিকভাবেই তারা এই ধরনের কথাবার্তা বলবে যাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সেটাতে তারা সক্ষম হয়নি। গণতান্ত্রিক যে রীতি রয়েছে, যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পরিবর্তন, আমরা সেটাতে বিশ্বাস করি বলেই একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি হিসেবে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আমরা আগেও বলেছি, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার এবং গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আমরা এই নির্বাচনে অত্যন্ত সিরিয়াস। তাদের (আওয়ামী লীগের) যে যুক্তি, তা কোনোদিনই গ্রহণযোগ্য না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিন্তু এই সরকার জোর করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচন তাদের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করে। সেটার প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।ঢাকা-১০ আসনে উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী শেখ রবিউল আলম রবির জয়ের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রার্থী গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামী একজন নেতা। ছাত্র রাজনীতি করেছেন, দীর্ঘকাল রাজনীতি করছেন এবং এলাকায় তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয় মানুষ। আমি বিশ্বাস করি, সে অত্যন্ত মেধাবী ছেলে। তার মেধা দিয়ে সে কন্ট্রিবিউট করতে পারবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, সহসভাপতি নবী উল্লাহ নবী প্রমুখ।

 

 

 

সুত্র-যুগান্তর