গভর্নরের চাকরির মেয়াদ বাড়ল

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়ে সংসদে বিল পাস করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২০ নামে বিলটি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হলে। শুরুতেই বিল পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। এরআগে বুধবার বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়।

বিলটি জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রওশন আরা মান্না, পীর ফজুলুর রহমান এবং বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ এবং রুমিন ফারহানা।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু ও বিএনপির হারুন অর রশীদসহ বেশ কয়েকজন এমপি এই বিল পাসের বিরোধিতা করে বলেন, একজন ব্যক্তির জন্য এই ধরনের বিল পাস সংবিধানবিরোধী। আর এটি একটি খারাপ উদাহরণ হিসেবে থাকবে।
জনমত যাচাই ও বাছাই করার প্রস্তাবের ওপর তারা আলোচনা করেন। পরে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে সর্বসম্মতিক্রমে কণ্ঠভোটে পাস হয়। এখন এই বিলে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করার মধ্য দিয়ে কার্যকর হবে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের অবসরের বয়স ৬৫ বছর থেকে ৬৭ বছরের উন্নীত হল।
জনমত যাচাই বাছাই নিয়ে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশে ব্যাংক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের অর্থ ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় স্তম্ভ। আমাদের অর্থ ব্যবস্থা কি পরিমাণে দাঁড়িয়েছে যারা আলোচনা করেছেন তারা জানেন। তারা প্রশ্ন করেছেন সময় বাড়ানোর প্রস্তাব কেন আসছে, আগে কেন করা হলো না। এইভাবে যদি বিচার করা হয় তাহলে সঙ্গত হবে না।

তিনি বলেন, আমাদের পূর্বের গভর্নর যারা ছিলেন তারা সবাই অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন, প্রাজ্ঞ ও অভিজ্ঞ ছিলেন এবং এমনকি সরকারি কর্মচারীদের আগে বয়স ছিল ৫৭ বছর আমরা যখন চাকরি করতাম তখন ৫৭ ছিল এখন সরকার পরিবর্তন করে ৫৯, ৬০ করেছে।

বিচারপতিগণের ৬৭ বছর পর্যন্ত উপভোগ করছে সুতরাং সময়ের পরিবর্তনে স্বাস্থ্য ভালো হচ্ছে, অনেক বেশি নতুন নিয়ম কানুন আসছে এটার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে গিয়ে আইন কানুন পরিবর্তন করতে হয়। এটাই প্রথম আইন না। জীবন্ত সরকার সময় সময় রিঅ্যাডজাস্ট করে চলতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যগণ যুক্তি সঙ্গত কথা বলেছেন। তার চেয়ে আরও বেশি যুক্তিসঙ্গত হলো বাস্তবতা। এই বাস্তবতায় যে ধরনের গভর্নর প্রয়োজন তার যে অভিজ্ঞতার দরকার তার যে শিক্ষার দরকার তার জন্য যে প্রজ্ঞতার প্রয়োজন এগুলো বিচার করেই আমরা এই ব্যক্তিকে, এটা কোন ব্যক্তির বিষয় না, গভর্নর পোস্টের কথা বলেছি। এটা শুধু উনার জন্য না। এখন থেকে যারা গভর্নর হবেন এই সংসদ পুনরায় পরিবর্তন না করা পর্যন্ত এই ৬৭ থাকবে।

প্রসঙ্গত বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালিত হয় বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী। এখানে বলা আছে, সরকার গভর্নর পদে নিয়োগ দেবে এবং এর মেয়াদ হবে চার বছর। সরকার চাইলে মেয়াদ বাড়াতে পারবে। তবে বয়স হতে হবে ৬৫ বছরের মধ্যে। সূত্র-যুগান্তর