গাংনীতে কফি হাউসে বসে পরকীয়া প্রেমিকার সামনে সেনা সদস্যের আত্মহত্যার নাটক

প্রথম প্রেমিকার সাথে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কফির সাথে বিষ মিশিয়ে বিষপানের নাটক করে সোহেল নামের এক সেনা সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই সেনা সদস্য মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের শুভরাজপুর গ্রামের মৃত ইসরাফিলের ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকা সেনানিবাসে কর্মরত আছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে গাংনী উপজেলার গ্রীন কফি হাউসে কফি খাওয়ার সময় প্রেমিকার সামনে এই নাটকীয় ঘটনা ঘটান।

পুলিশ ও স্থানীয়রা সূত্রে জানা গেছে, শুভরাজ পুর গ্রামের সেনাসদস্য সোহেল রানা চাকরি থেকে ছুটিতে বাড়ি আসে সপ্তাহখানেক আগে। ছুটিতে এসে তার প্রথম প্রেমিকাকে সাথে নিয়ে গাংনীতে একটি কফি হাউসে কফি খেতে বসে।

এ সময় প্রেমিককে তার সাথে পালিয়ে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। সোহেল রানা বিবাহিত হওয়ায় তার প্রস্তাবে রাজি না হলে পকেট থেকে একটি ট্যাবলেট বের করে কফির সাথে মিশিয়ে তা পান করে।

উক্ত কফি পান করার সাথে সাথে বমি শুরু হলে স্থানীয় কফি সপের মালিক তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। স্থানীয় মানুষ বিষয়টি গাংনী থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশের এসআই তপনসঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেনা সদস্য সোহেল রানাকে চিকিৎসার জন্য বিষমুক্ত করতে চাইলে সোহেল রানা বলেন আমি কিছুই খাইনি। শুধু প্রেমিকাকে ভয় দেখানো হয়েছিল।

প্রেমিকা জানান চার বছর ধরে আমার সাথে সোহেলের সম্পর্ক। আমার সাথে তার বিয়ের কথা ছিল। সে সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়াই আমাকে ছেড়ে এক মেয়ের সাথে দুই বছর আগে বিয়ে করে। তারপর কয়েক মাস আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে সে আমাকে বিয়ে করবে বলে নানা ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে ফোন দিতে থাকে। আর আমাকে না পেলে আত্মহত্যা করবে বলে ওয়াদা করে। শুধু তাই নয় সে হারপিক ও বিষের বোতল দিয়ে আমাকে ভিডিও কলে দেখায় আমি নিরুপায় হয়ে তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে বাধ্য হয়েছি।

আজকেও সে গাংনীতে আসার কথা বললে আমি আসতে রাজি হইনি। সে আত্মহত্যা করে আমাকে ফাঁসাতে চায় আমি এক প্রকার নিরুপায় হয়েই তার সাথে দেখা করতে আসি। আমাকে সে বিয়ে করার জন্য পালিয়ে যেতে বললে আমি বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করি তখন সে আমার সাথে এই আত্মহত্যার নাটক করে। স্থানীয়রা আমাকে ও সোহেলকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

পরে পুলিশ এসে পুরো ঘটনা শুনতে চাইলে পুলিশকে বিস্তারিত বলেছি। গাংনী থানা পুলিশের তদন্ত ওসি সাজেদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

গাংনী থানার ওসি ওবায়দুর রহমান জানান এমন একটি ঘটনা তিনি শুনে পুলিশ পাঠিয়েছেন। তবে এব্যাপারে কোনো পক্ষেরই কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।