গাংনীতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে

মেহেরপুরের গাংনীর সাহারবাটি গ্রামে স্বামীর পরকিয়ায় বাধা দেয়ার জের ধরে গৃহবধু আসমানি খাতুনকে শারীরীক নির্যাতন করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ৫ এপ্রিল এ ঘটনা ঘটলেও বৃহষ্পতিবার ভোরে আসমানি খাতুনের মৃত্যু হয়।
আসমানির মা রাকেদা খাতুন জানান, স্বামী সাজেদুল এর পরকিয়া প্রেমে বাধা দেয়ায় আসমানিকে মাঝে মাঝে নির্যাতন করতো সাজেদুল। গত ৫ এপ্রিল রাতে সাজেদুল ইসলাম তার পরকীয়া প্রমিকার সাথে মোবাইলে কথা বলছিলেন। সে কথা শুনতে স্বামীর কানের সাথে কান লাগায় আসমানী। এতেই রাগান্নিত হয়ে লাঠি দিয়ে মারধর করে আসমানীকে। পরে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হলে সাজেদুল ও তার বাড়ির লোকজন মিলে নির্যাতন শেষে আসমানীর মুখে আগাছা নাশক বিষ ঢেলে দেয়। প্রতিবেশিরা টের পেয়ে আসমানিকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ১৩ এপ্রিল সোমবার আসমানীর বাবার বাড়ি হাড়িয়াদাহ গ্রামে নিয়ে আসে। পরে ১৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ভোরে আসমানির মৃত্যু হয়।
এবিষয়ে আসমানীর পিতা আরশেদ আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলার অভিযোগ করেন। যার নং ১৩।
আসমানীর ১১ বছর বয়সী ছেলে তুহিন জানায়, বাবা এবং মায়ের সাথে মাঝে মধ্যেই ঝগড়া হতো এবং মাকে মারধর করতো বাবা। সেদিনও মাকে মারধর করে।
স্থানীয়রা জানায়, বিষয়টি ভিন্ন দিকে নেয়ার জন্য নিহত আসমানী ও তার স্বামীর পরিবারের মধ্যে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মিমাংসার প্রক্রিয়া চালায় স্থানীয় মেম্বরা। একপর্যায়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় মিমাংসা হয় বলে তারা জানায়।
তবে টাকার বিনিময়ে একটি হত্যা ও নির্যাতনের মত ঘটনাকে ধামা চাপা না পড়ে এবিষয়ে পুলিশকে তদন্ত করে সত্য ঘটনা উদঘাটনের দাবি জানান স্থানীয়রা।
অভিযোগ তদন্তকারি কর্মমর্তা এসআই আব্দুর রাজ্জাক জানান, লাশের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। তাতে নিহত আসমানীর পায়ের বিভিন্ন যায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। ময়না তদন্ত শেষে সত্যতা প্রকাশ হবে।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে আসমানির বাবা আরশেদ আলী বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা ঘটনা তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। প্রাথমিক তদন্ত শেষ হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইয়াদুল মোমিন
০১৭১২-৮৮৫৮৫৫