গাংনীর পল্লীতে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার স্কুল ছাত্রী

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শালদহ গ্রামের এস এ আর বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীর যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০১৯ সালের জেএসসি পরীক্ষার্থী ঐ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষক এনামুল ইসলাম যৌন হয়রানি করে বলে এলাকায় গুঞ্জন ওঠে। পরে এর সত্যতাও পাওয়া যায়।

যৌন হয়রানির শিকার ঐ ছাত্রীর বাবাকে হুমকি ধামকিও দেয় প্রধান শিক্ষক এনামুল ইসলাম।

ভুক্তোভুগি ছাত্রীর বাবা একজন গরীব দিনমজুর। সে শালদহ গ্রামের বাসিন্দা।

প্রথম দিকে মেয়েটির বাবা এর প্রতিবাদ করলেও হুমকির পর থেকে সে আর মুখ খুলতে চাননি।

তবে ভুক্তোভোগি ছাত্রী জানায়, প্রধান শিক্ষক এনামুল ইসলাম জেএসসি পরীক্ষায় রেজিষ্ট্রেশন পত্রে তার ছবি ভুল হওয়ায়। সে ঐ ছাত্রীর বাড়িতে দুপুরের দিকে আসে। সে সময় ঐ ছাত্রী বাড়ি পরিষ্কারের কাজে ব্যাস্ত ছিল। তার মা দোকানে সদায় করতে গিয়েছিল। সে সময় বাড়িতে আর কেউ ছিলনা। বাড়ি ফাঁকা দেখে প্রধান শিক্ষক ছাত্রীর ঘরে উঠে পড়ে।

এসময় ঐ ছাত্রী তাকে জিজ্ঞাসা করলে শিক্ষক বলে তোমার ছবি ভুল হয়েছে। এসব কথা বলে এক সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিলে। ঐ ছাত্রী তাকে তিরস্কার করে এবং বলে আমি চিৎকার করব। এসময় ঐ শিক্ষক ঘরের বাইরে চলে আসে এবং ঐ ছাত্রীকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কিছু টাকা দিতে গেলে ঐ ছাত্রী তা প্রত্যাক্ষান করে।

এদিকে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে, প্রধান শিক্ষক এনামুল ইসলাম এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকদের হাত করে ছাত্রীর বাবাকে হুমকি ধামকি দেয় বলে জানা যায়।

তবে কেউ কেউ জানিয়েছেন, ঐ ছাত্রীর বাবাকে কিছু টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছে।

জানতে চাইলে ঐ ছাত্রীর বাবা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা গরীব মানুষ আমার মেয়ে ভাল আছে। তাছাড়া তেমন কিছুই হয়নি। মেয়েকে বিদ্যালয়ে না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়ের বয়স হয়েছে তার বিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া গরীব মানুষের মেয়ে লেখা পড়া চালানো সম্ভব না। তাই মেয়েকে বিদ্যালয়ে আর পাঠাবনা।

মেয়ের বাল্য বিয়ে দিলে জেলা জরিমানা হতে পারে এমন কথা বললে তিনি বলেন মেয়েকে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করব। কিন্তু ঐ বিদ্যালয়ে পাঠাবনা।
এদিকে প্রধান শিক্ষক এনামুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির ব্যাপারে একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে অনেকে জানান।

জানতে চাওয়া হলে প্রধান শিক্ষক এনামুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ একেবার মিথ্যা। আমাকে ফাঁসানোর জন্য এসব মিথ্যা কথা রটানো হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এলাকায় আমার কিছু প্রতিপক্ষ রয়েছে তারা আমার বিরুদ্ধে এ সব অপপ্রচার চালাচ্ছে। কারা এবং কেনই বা অপপ্রচার চালাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মোবাইলে না বলে সরাসরি বলবেন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

-গাংনী প্রতিনিধি