গাংনীর ভাটপাড়া আবাসনে পৌছায়নি খাদ্য সহায়তা ৯০ পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন

মহামারী করোনার ছোবলে পড়ে কর্মহীণ হয়ে ধুকছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা। ৯০ টি পরিবারের কেউ পায়নি সরকারী বা বেসরকারী ত্রাণ। কর্মহীণ হয়ে পড়ায় অভাব যেন হা করে গিলে খাচ্ছে ওদের। তবে স্থানীয় সাংসদ বলছে অতিদ্রত তাদের মাঝে পৌছে যাবে খাদ্য সহায়তা।

বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া বৃদ্ধ সাবান আলী। তিনি পেশায় একজন ভিক্ষুক। সারাদিন বাড়ি বাড়ি ঘুরে দিন কাটতো তার। সারা দিনে মানুষের কাছে চেয়ে যা পেতেন নিজেন চিকিৎসা খরচ চালিয়ে খাবার কিনতেন। বর্তমানে করো বাড়ি যাওয়া নিষেধ থাকায় উপার্জন বন্ধ হয়ে পেড়েছে। খাবার সংকট ছাড়াও ওষুধ কিনতে না পারায় ধুকছেন বৃদ্ধ সাবান আলী।

বৃদা রমেছা বেগম। স্বামী অনেক আগেই মারা গেছেন। অনেক বয়স হয়েছে। বেশিদুর হাটতে পারেননা। তবুও পাচ বাড়িতে ঘুরে জীবন চালাতে হতো। বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি কোথাও বের হতে না পারায় খাদ্য খাবারে টানা পড়েন চলছে।

এভাবে আর কটা দিন চলতে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে বলতে গিয়ে চোখের পানিতে বুক ভাসিয়েছেন। খুব দ্রত বিত্তবানদের সহযোগীতার হাত বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন তারা। আবাসনের আর এক বাসিন্দা মৃত মুরদি আলীর বিধবা স্ত্রী রহিমা বেগম। তিনিও ভিক্ষাবৃত্তিতে সংসার চালান। এখন তার করুন পরিনতি । খাবার সংকট ও ওষুধ কেনা টাকা নেই।

তার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অতিতের দুর্ভিক্ষের কথা শুনিয়ে বলেন এখন অনেক মানুষ অনেক মানুষকে সাহায্য সহযোগীতা করছে শুধু শুনতেই পাচ্ছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কেউ তাদের দিকে সহযোগীতার হাত বাড়ায়নি।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া নীলকুঠি এলাকায় ২০০৫ সালে ছিন্নমুল মানুষের জন্য নির্মাণ করা হয় আবাসন প্রকল্প। ৯০ টি পরিবারের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। আশ্রয় নেয় দিনমজুর ও ভিক্ষুক।

এখানে রয়েছে অন্তত তিন শতাধিক লোকের বসবাস। গত মাসের শেষ সপ্তাহে লোকজনকে ঘরে থাকতে বলা হয় ও দোকান পাট বন্ধ করে দেয়া হয়। সে থেকে কর্মহীণ হয়ে পড়ে সকলেই। ভিক্ষুকরাও বের হতে পারে না।

এমতাবস্থায় পরিবারের লোকজনকে নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনপাত করছে আবাসনের বাসিন্দারা। অপেক্ষায় রয়েছে সরকারী বা বেসরকারীভাবে বিতরণ করা ত্রাণের। কিন্তু অদ্যাবদি কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি সেখানে। কাজের আশায় প্রতিদিন শহরে যাওয়া হতো। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব ঠেকাতে শহরের দোকান পাট ও চলাচল বন্ধ করা হয়।

ভিক্ষুকরাও ভিক্ষা করতে পারে না। ফলে পরিবার নিয়ে মহা সংকটে পড়েছেন বাসিন্দারা। জরুরী ভাবে ত্রাণের ব্যবস্থা না করা হলে অনাহারে ধুকে ধুকে মরতে হবে এমন আর্তনাদ তাদের।

সরকারি সহযোগীতার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, অনেক মানুষকেই খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে খুব শিঘ্রই আবাসনের বাসিন্দাদের মাঝে সহায়তা পৌছে যাবে। গাংনীতে একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না।