গাংনী পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিক্ষোভ, কর্মবিরতী

গাংনী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কান্সিলর বাবলুর রহমানের বিরুদ্ধে লাঞ্ছিতর অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট করে পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

বুধবার দুপুরে গাংনী পৌরসভার গেটে পৌর কর্মকর্তা কর্মচারিরা এ কর্মসূচী পালন করেন।

এ সময় পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের সামনে আন্দোলনরত কর্মকর্তা কর্মচারিরা কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর শ্লোগান দিলে ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল বদরুল ইসলাম বুদু ও ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নবিরুদ্দিন প্রতিবাদ করেন।

মেহেরপুরের গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম সকলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন আমার কোন প্রকার দূর্নীতি যদি কেউ প্রমান করতে পারে তাহলে সাথে সাথে আমি আমার চেয়ার ছেড়ে দেব। এক পর্যায়ে কাউন্সিলররা মেয়র আশরাফুল ইসলামকে দায়ি করে অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন মেয়রের ইন্ধনে পৌর কর্মচারিরা আমাদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর শ্লোগান দিয়েছে।

এ নিয়ে পৌর পরিষদের কর্মকর্তা কর্মচারি ও কাউন্সিলরদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। কাউন্সিলররা আন্দোলনের বিষয়ে পৌর মেয়রকে দায়ি করলে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম কাউন্সিলরদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তাদের বারবার মাসিক মিটিংএ ডাকলে তারা আসেননা। এদিকে কাউন্সিলররা অভিযোগ করে বলেন আজকে মাসিক মিটিং ছিল বলে এসেছি। কিন্তু মেয়র আশরাফুল ইসলাম মাসিক মিটিং বানচাল করার জন্য কর্মচারিদের ইন্ধন দিয়ে তাদেরকে দিয়ে অহেতুক আন্দোলন করাচ্ছেন।

এদিকে কাউন্সিলরদের অভিযোগ অস্বীকার করে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন আমার পৌর সভায় কোন প্রকার দূর্নীতি মেনে নেবনা আমি নিজেও তা করবনা। মেয়রের কথার প্রতিবাদ করে কাউন্সিলররা তার দূর্নীতির কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

এ সময় ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নবিরুদ্দিন,৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বদরুল ইসলাম বুদু, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সহিদুল ইসলাম, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইনামুল হক, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান,৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আছেল উদ্দিন, ১,২,ও ৩ নং ওয়ার্ড এর মহিলা কাউন্সিলর ফিরোজা বেগম উপস্থিৎ থেকে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের নিয়োগ বানিজ্য নিয়ে দূর্নীতির কথা তুলে ধরে বলেন পৌর সভায় লোক নিয়োগ দেওয়া বলে অনেকের সাথে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
কাউন্সিলর ইনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন আমার ভাইয়ের ছেলেকে চাকুরি দেবে বলে প্রায় ৮লক্ষ টাকা নিয়েছে অথচ এখন পর্যন্ত কোন চাকুরি দেয়নি।

এছাড়া ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, আমার ওয়ার্ডের বাহাদুর নামের এক বাসিন্দার মেয়েকে চাকুরি দেবে বলে অনেক আগে টাকা নিয়েছে অথচ চাকুরিতো দুরের কথা সেই টাকা চাইতে গেলে ভুক্তোভোগিকে আজকাল করে হয়রানি দিচ্ছে। পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্য নিয়ে আরও অভিযোগ রয়েছে বলে কাউন্সিলররা অভিযোগ করেন। তারা মেয়রের দূর্নীতির বিষয়ে প্রমাণ সহ সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন।

৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিএনপি নেতা সহিদুল ইসলাম বলেন, পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম মেয়র হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ সেজে আছে। আগে মেয়র আশরাফুল ইসলাম বিএনপি’র অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। স্বতন্ত্র ভাবে পৌর ভোট করে পাশ করার পর তিনি আওয়ামী লীগ সেজে যুবলীগের নেতা দাবি করছেন।

এ ধরণের নানান অভিযোগ চলাকালে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম সে স্থান ত্যাগ করেন। পরে কাউন্সিলররা পৌরসভার সেবা দেওয়ার নামে যে অর্থ আদায় করা হয় তা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করেছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

কাউন্সিলর আছেল উদ্দিন বলেন ব্রিটিশরা যেমন নীল চাষ করত পৌরবাসিদের সেবার নামে যে কর আদায় করা হয় তা সেই নীল চাষের মতোই। পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম নীল করদের মতো আচরণ করছে।

এ বিষয়ে কাউন্সিলররা উর্দ্ধতন মহলে জানাবেন এবং এর একটি সুরুহা দাবি করবেন বলে জানিয়েছেন।

মেপ্র/ইএম