গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ফজলুল হকের নিয়োগ নিয়ে নানা প্রশ্ন!

মেহেরপুরের গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজে ফজলুল হক অবৈধ নিয়োগের বৈধতা দেখিয়ে সরকারি সুবিধা ভোগ করছে। এ ছাড়াও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই নিজ নামে একটি বেসরকরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করেন।

বর্তমানে ফজলুল হক সেন্টু গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজে পরিসংখ্যান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। কিন্ত তার এই প্রভাষক হওয়ার পিছনে রয়েছে নানা অনিয়ম।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তৎকালীন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ ভাবে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ নেন।

১৯৯৪ সালের ৩০ জুলাই ছিল গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক নিয়োগের শেষ তারিখ।

এ সময় আবেদন করেন ফজলুল হক সেন্টু । কিন্তু আবেদনের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারিনি। কারণ, ফজলুল হক মাস্টার্স পাশ করেন ১৯৯৫সালে। সে হিসেবে ফজলুল হক আবেদন করতে পারে না। কিন্তু সে সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে গাংনী ডিগ্রী কলেজের ততকালীন অধ্যক্ষ প্রয়াত আব্দুল খালেক এর সহযোগীতায় অবৈধভাবে নিয়োগ নেয় ফজলুল হক ।

এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয় কতৃক একটি তদন্ত টিম ফজলুল হক এর নিয়োগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়। পরবর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগের বৈধতা দিলে সরকারি বেতন ভাতা চালু হয়।

ইতিমধ্যে ফজলুল হক নিজ বাড়িতে গাংনীতে ২০০২ সালে “ ফজলুল হক আইডিয়াল স্কুল” নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। সরকারি নিয়ম ভঙ্গ তরে সেই প্রতিষ্ঠান তিনি নিজেই পরিচালনা করেন।

এই প্রতিষ্ঠান নিয়েও আছে সাধারণ জনগনের বিরুপ প্রতিক্রিয়া। নারি কেলেঙ্কারি সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

গাংনীর জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, বিগত জোট সরকারের আমলে ফজলুল হক ব্যাপক দাপট দেখিয়েছে। সে সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ইচ্ছেমত সুবিধা আদায় করেছে। পরবর্তিতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে কিছুটা শান্ত হয়। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আবার বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তার তান্ডবে এলাকার কোন আওয়মী লীগ শান্তিতে বসবাস করতে পারিনি। কারনে অকারনে আওয়মী পন্থিদের বিভিন্ন নির্যাতন করেছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাশার বলেন, এ নিয়োগের বিষয়ে আমাদের জানা নেই। সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই রকম কোন নিয়ম নেই।

এ বিষয়ে ফজলুল হক বলেন, আমার নিয়োগে কোন ঝামেলা নেই। আমি ১৯৯০ সালে মাস্টার্স পাশ করি সেই সার্টিফিকেট দিয়ে আমি চাকরি পাই। আমার বাড়িতে যে প্রতিষ্ঠান আছে সেটা ভাড়া দেওয়া আছে।

গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম বলেন, ফজলুল হক নিয়োগ পেয়েছেন প্রয়াত অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক এর সময়। সে সময় তার নিয়োগ কিভাবে হলো আমি জানিনা। তবে তার নিয়োগে কিছুটা হলেও অনিয়ম থাকতে পারে। কারণ রস সময় নিয়োগ দেওয়া ছিল ১৯৯৪ সালে কিন্তু ফজলুল হকের সার্টিফিকেট ১৯৯৫ সালের।

-আল-আমীন ও মর্তুজা ফারুক রুপক