চুয়াডাঙ্গায় টানা এক সপ্তাহ বৃ‌ষ্টির পূর্বাভাস দিলো আবহাওয়া অফিস

চুয়াডাঙ্গায় টানা ২২ দি‌ন ধ‌রে অব্যাহত র‌য়ে‌ছে দে‌শের স‌র্বোচ্চ তীব্র থে‌কে অতি তীব্র তাপমাত্রা। আজ শুক্রবার সহ গত তিন দিন ধরে তাপমাত্রার পারদ একটু একটু ক‌রে নাম‌তে শুরু ক‌রে‌ছে চুয়াডাঙ্গায়। এরই মধ্যে আবহাওয়া অফিস জানাল আগামী ৬ মে থে‌কে ১২ মে পর্যন্ত টানা বৃ‌ষ্টি হতে পারে চুয়াডাঙ্গাতে।

এখা‌নে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কম‌লেও বাতাসে বইছে আগুনের হল্কা। বাইরে বের হ‌লে রো‌দের তীব্রতায় ম‌নে হ‌চ্ছে শরীর ঝল‌সে যা‌চ্ছে। বেলা বাড়ার সা‌থে রো‌দ্রের তীব্রতা ও ভ্যাপসা গরম তরতর ক‌রে বাড়‌ছে। দাবদাহের এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই জেলার প্রতিটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে রিকশা-ভ্যান চালক ও পথচারীদেরকে ক্ষণিকের স্বস্তি দিতে ও পিপাসা নিবারণেন জন্য সুপেয় পানি, শরবত, স্যালাইন, আখের রস, ডাব খাওয়ানো হচ্ছে এবং ছাতা উপহার দেওয়া হচ্ছে।

আজ শুক্রবার বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গার স‌র্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস ‌রেকর্ড করা হ‌য়ে‌ছে। এ সময় বাতা‌সের আদ্রতা ছিল ১১ শতাংশ। বাতা‌সে জলীয় বা‌ষ্পের প‌রিমাণ অ‌নেক বেশি থাকায় ঘ‌রে ভ্যাপসা গরম আর বাইরে রো‌দের তা‌পে শরীর জ্বালা পোড়া অনুভূত হ‌চ্ছে ব‌লে জানান চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্য‌বেক্ষণাগা‌রের ইনচার্জ জা‌মিনুর রহমান।

আর এই দাবদা‌হে সবচাইতে বে‌শি বিপা‌কে প‌ড়ে‌ছেন দিন মজুর খে‌টে খাওয়া রিকশা ভ্যান চালকরা। হিটস্ট্রো‌কের ঝুঁকি মাথায় নি‌য়ে রিকশা ভ্যান চালক ও দিন মজুর শ্র‌মিকরা কাছ কর‌ছে বাধ্য হ‌য়ে। চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়ে আসছে এই জেলায়। একটানা প্রায় ২২ দিন দে‌শের স‌র্বোচ্চ তীব্র থেকে অতিতীব্র দাবদাহে হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতা‌লে সামান্য জনবল নি‌য়ে চিকিৎসা দিতে হিম‌শিম খা‌চ্ছেন ডাক্তাররা। গরমজ‌নিত রো‌গে আক্রান্ত হ‌য়ে প্র‌তি‌দিনই ভর্তি হচ্ছেন শতা‌ধিক রোগী। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা হাসপাতালের বারান্দা ও করিডোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া আউট‌ডো‌রে শত শত গরমজ‌নিত রো‌গে আক্রান্ত মানুষ চি‌কিৎসা নি‌য়ে বা‌ড়ি ফির‌ছেন। আর এ রো‌গে আক্রা‌ন্তের বেশির ভাগ রোগীই শিশু ও বৃদ্ধ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, বেলা বাড়ার সা‌থে রো‌দ্রের তীব্রতা ও ভ্যাপসা গরম তরতর ক‌রে বাড়‌ছে। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ দশ‌মিক ৫ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস। এ সময় বাতা‌সের আদ্রতা ছিল ৪৪ শতাংশ। দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশ‌মিক ৫ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস। এ সময় বাতাসে আদ্রতা ছিলো ১২ শতাংশ। বেলা ৩টায় জেলার স‌র্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশ‌মিক ৮ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস। এ সময় বাতা‌সের আদ্রতা ছিল ১০ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্য‌বেক্ষণাগা‌রের ইনচার্জ জা‌মিনুর রহমান জানান, গত প্রায় ২২ ধরে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় জেলায় হিট অ্যালার্ট জারি আছে। আজ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রার পারদ সর্বোচ্চ ৪০ থে‌কে ৪৩ দশ‌মিক ৭ ডিগ্রি‌তে উঠা নামা কর‌ছে।

তি‌নি আ‌রো ব‌লেন, আগামী ৬ মে থে‌কে ১২ মে পর্যন্ত টানা বৃ‌ষ্টির দেখা মিল‌তে পা‌রে। সে কার‌ণে বৃ‌ষ্টি শুরুর আ‌গে কৃষক‌দের‌কে মা‌ঠের ফসল ঘরে তোলার জন্য বি‌শেষ ভা‌বে অনু‌রোধ ক‌রে‌ছেন তি‌নি।