
ঝিনাইদহ -২(ঝিনাইদহ সদর-হরিণাকুণ্ডু) আসন ঘিরে বিএনপির নেতা কর্মীদের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে । আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসাবে ২৩৭ জনের নাম ঘোষনা করা হয়েছে।
৩ নভেম্বর বিকালে বিএনপির গুলশান কার্যালয় থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। উক্ত তালিকায় ঝিনাইদহ-২ আসনে কারও নাম ঘোষণা কর হয়নি ফাঁকা রাখা হয়েছে। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনে যুগপৎ আন্দোলনে গণঅধিকার পরিষদের ভুমিকা ছিল অন্যন্য ।
সেই সূত্রে জোটের প্রার্থী হিসেবে নুরুল হক নুর এবং রাশেদ খাঁন আলোচনায় রয়েছে। জোটের স্বার্থ বিবেচনায় গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁনকে ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে প্রার্থী করা হতে পারে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে এবং বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার জন্ম দিয়েছে। তারা মনে করেণ এ আসনটি যদি গণঅধিকার পরিষদকে ছাড় দেয়া হয় তাহলে ঝিনাইদহে বিএনপিতে নানা সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবী, দীর্ঘ ১৭ বছর তারা বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডঃ এম.এ মজিদের নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছেন। হামলা, মামলা ও জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। তিনি দলের নিবেদিত প্রাণ ও ত্যাগী নেতা। তাকে মনোনয়ন না দিলে তারা নির্বাচনী মাঠে থাকবে না। দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের কর্মীরা ইমেজ সংকটে পড়তে পারে। এতে লাভবান হতে পারে জামায়াত বা অন্য স্বতন্ত্র পার্থীরা। পক্ষান্তরে বিএনপির ঘাটি বলে পরিচিত এ আসনটি বিএনপির হাত ছাড়া হতে পারে বলে আশংকা করছেন তারা।
জেলা বিএনপির যুগ্মসাধারন সম্পাদক আসিফ ইকবাল মাখন বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে কেন্দ্রীয় ভাবে গণঅধিকার পরিষদের ভুমিকা থাকলেও ৫ আগষ্টের আগে ঝিনাইদহে তাদের কোন ভুমিকা ছিল না। এমনকি দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের নাম ৫ আগষ্টের আগে ঝিনাইদহের মানুষ জানতো না। নির্বাচনী এলাকায় তার তেমন কোন পরিচিতি নেই।
জেলা বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ভাবে দল যদি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ে এ আসনটি শরীক দলের ছেড়ে দেয় তাহলে আগামীতে দলীয় মিছিল মিটিং বা আন্দোলনে নেতা কর্মী খুঁজে পাওয়া যাবে না । সে ক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন না পেলে দলের মধ্যে শৃংখলা ভঙ্গ হবে।
ঝিনাইদহ সদর-২ আসন হোল্ড করে রাখার বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জানান, বিএনপির সাথে আমরা ২০২২ সাল থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে একসাথে কাজ করেছি। সে ক্ষেত্রে সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিল তাদের সাথে পজেটিভ ভাবে একসাথে ইলেকশন করার আলোচনা চলছে। এটা এখন পর্যন্ত চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ঝিনাইদহ-২ আসনে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি না হয় এর জন্য চিঠি দিয়েছিল। শুধু এই আসন হোল্ড করে রেখেছে এ রকমও না। যুগপৎ আন্দোলনের আরো যারা অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দ আছে সেখানেও হোল্ড করে রেখেছে। এ বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা চলছে। চুড়ান্ত হলে জানাবো।
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডঃ এম,এ মজিদ বলেন, ১, ২ও ৪ দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থী চুড়ান্ত। তবে রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে ডিক্লেয়ার করা হয়নি । তিনি আরো বলেন, ঝিনাইদহ সদর-২ আসনটি দলীয় হেড কোয়ার্টার। এ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে। এ আসনে অন্য কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এঘটনায় তৃণমূল পর্যায় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।


