দর্শনার ধীরু বাউল সহ ১০ জনকে সম্মাননা

দর্শনার ধীরু বাউল সহ ১০ জনকে সম্মাননা

অপ সংস্কৃতি রুখতে ও গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকজ অনুষ্ঠান বেশী বেশী প্রচার ও প্রসার করতে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুদিন ব্যাপি ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রয়াত সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরী অডিটোরিয়ামে দুই বাংলার (ভারত-বাংলাদেশ) কবি সাহিত্যিক ও শিল্পীদের নিয়ে মিলন মেলা ও সম্মেলন অনুষ্টিত হয়।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের লোকসংগীত শিল্পী ও চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান ধীরু বাউল ও কলকাতার শিল্পী ড.শিবানি দাসের কন্ঠে লালন সাঁইজির বিখ্যাত বাণী”” মিলন হবে কতদিনে” গানের মধ্যে দিয়ে শুভ সুচনা করা হয়।

কলকাতা বিশ্ববংগ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংগঠনের সভাপতি ড. রাধাকান্ত সরকারের সভাপতিত্বে দুদিন ব্যাপি এ বর্ণাঢ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি ফরিদা ইয়াসমিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে  ফরিদা ইয়াসমিন বলেন দেশে বা বিদেশে মাটিরগান লোকগান বাউল জারিগান, বিচ্ছেদি, যাত্রা নাটক হারাতে বসেছে।এক সময় গ্রামের বাঁশতলা বটতলা, হাটেরমোড়ে, বড় উঠানে এ সব লোকজ অনুষ্টান হইতো, তখন গ্রামের সব বয়সি মানুষ রাত জেগে বসে বসে শুনতো। কত ভালো না লাগতো। বর্তমানে সেই সব মাটিরগান সহ অন্যান্য অনুস্ঠান না থাকায় আমরা যেন রুক্ষ মেজাজি বদ মেজাজি হয়ে বড়দের সম্মান না দিয়ে ইচ্ছেমত চলছি।তবে দেরীতে হলেও কলকাতা বিশ্ববংগ সাংস্কৃতিক সংগঠন যে এতো বড় একটি দায়িত্ব নিয়ে দুই বাংলার কবি শিল্পীদের মিলনমেলা ঘটাতে পেরেছে তার জন্য সংগঠনটিকে ধন্যবাদ। তিনি বললেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা মহদ্বয়ের সাথে গত সপ্তাহে বেশ কয়েকটি দেশে গিয়েছিলাম, সেখানে কিছু কিছু সাংস্কৃতিক অনুস্ঠান দেখলাম,তবে আমার দেশের মাটিরগান বাউলগান বিচ্ছেদগানের যে সুর টান তা পেলামনা।তবে আমি কথা দিচ্ছি বাংলার চিরায়ত রুপ মাটিরগান ও লোকসংস্কৃতি উজ্জিবিত করতে আমার দেশে যত সহযোগিতা দরকার তা করবো,প্রয়োজনে সরকার বাহাদুরের সহযোগিতা প্রার্থনা করবো। বৃহস্পতিবার সন্ধায় দুদেশের শ্যামলি ও সৌহার্দ যাত্রী পরিবহনের পরিচালক শ্রী অবনি কুমার এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের জেনারেল সেক্রেটারি শ্যামলদত্ত। একই হলরুমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব শ্যামলদত্ত বলেন একটি দেশের পরিচয় বহন করে তার কৃষ্টি কালচারের উপর।আর তা হলো আমার দেশের সেই বাংলার লোকসংস্কৃতি, যার মধ্যে আছে লাঠি খেলা পিরেরগান ,ভাসানগান,গাজিরগান কিত্তন ভজন,কবিগান।যে সবগানে কোন উন্মাদনা নেই শুধু ভাবেরকথা আর মন প্রান জুড়ানো সুরের টান।সাথে একতারা দোতারা বাঁশি,বাংলার ঢোল, খমক রসদ যোগাতো।এখন সেগান খুব কমই হচ্ছে, সেগুলো খুব খুব দরকার।তিনি বল্লেন জাতিয় খেলা হাডুডু এ প্রজন্মের ছেলেরা তা বোঝেনা,কানামাছি, গাদি খেটেখেলা নাম শোনেনি।তিনি গ্রামিন ঐতিহ্যবাহি বিলুপ্ত প্রায় লোকজ অনুস্ঠান করার যে উদ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার।

তিনি বল্লেন এ বিষয়ে আমার সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান এ বি এম শহিদুল ইসলাম,পুলিশের সাবেক ডি আই জি জনাব মালিক খসরু,কলকাতা বংগোবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মীর সামী,ঢাকা বংগোবন্ধু ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট গোপালগন্জের কৃতি সন্তান কাজি মফিজুল হক, সাংবাদিক আঃ বারি, সোমা ইসলাম, দুলাল আহম্মদ, কবি সুভাষ বন্দোপদ্ধায়,শিবসংকর,গৌরি মজুমদার।পরে ভারতের ত্রিপুরা আসাম কলকাতা পশ্চিমবঙ ও বাংলাদেশের কুস্টিয়া,গাজিপুর,কুমিল্লা, চাঁদপুর কক্সবাজার, চট্রগ্রাম ব্রাক্ষনবাড়িয়া ও সিলেট অন্চলের কবি সাহিত্যিকরা কবিতা পাঠ ও। স্ব- স্ব দেশের লোককবিদের লেখা সংগীত পরিবেশন করেন। দর্শকদের অনুরোধে শাহ আঃ করিমের বিখ্যাত গান “”আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম গানটি ধীরু বাউল গেয়ে দর্শক মাতিয়ে তোলেন। শেষে প্রধান অতিথির মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা তথা দর্শনার ছেলে বাংলাদেশ টেলিভিশনের লোকসংগীত শিল্পী ধীরু বাউল ও কলকাতার শিল্পী ড,শিবানি দাস সহ ১০জন শিল্পী কবিকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাণনা স্মারক প্রদান করেন।