
দামুড়হুদায় দুর্নীতিমুক্ত ভূমি অফিস গড়ে তোলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) (এসিল্যান্ড) এইচ তাসফিকুর রহমানকে “ওরা বন্ধু সংঘ” দামুড়হুদার পক্ষ থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে তাকে এ বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
“প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ, একজন সরকারি কর্মচারী তার সেবক মাত্র” সংবিধানের এই কথাটি হৃদয়ে ধারণ করে ভূমি সেবা গ্রহীতাদের মাঝে হয়রানিমুক্ত ভূমি সেবা প্রদান করে অনন্য দৃষ্টান্ত গড়েছেন বিদায়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এইচ তাসফিকুর রহমান। ফলে তার কর্মদক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠার জন্য সম্পূর্ণ অলাভজনক, অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “ওরা বন্ধু সংঘ” তাকে সংবর্ধনা প্রদান করে।
সৎ, যোগ্য ও চৌকস এ ভূমি কর্মকর্তা মাত্র ১ বছর ৫ মাসের সংক্ষিপ্ত কর্মকালেই তার কর্মদক্ষতার মাধ্যমে ভূমি কার্যালয়কে হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে মানসম্মত ভূমি সেবা প্রদান, সেবাগ্রহীতাদের আস্থা অর্জন এবং ভূমি সেবায় উন্নত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ভূমি সেবা উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। তার সকল অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ ও সম্মান জানিয়ে “ওরা বন্ধু সংঘ” এ সংবর্ধনা প্রদান করেন।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং দামুড়হুদা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুরশেদ বীন ফয়সাল তানজিরের নেতৃত্বে, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও দামুড়হুদা প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মিরাজুল ইসলাম মিরাজের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট সমাজসেবক হাজী আব্দুল কাদির, হাফিজুর রহমান কাজল, সদস্য শেখ হাতেম, তিতুয়ার, রবিউল আওয়াল রুবেল, খালিদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা এসিল্যান্ড এইচ তাসফিকুর রহমানের কর্মজীবনের প্রশংসা করে বলেন, সরকারের জনবান্ধব কর্মকর্তা কাকে বলে এবং একজন জনবান্ধব কর্মকর্তা কীভাবে জনগণের সেবা প্রদান করেন তা স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি প্রমাণ করেছেন। তিনি অত্র কার্যালয়ে যোগদানের পর নিজের সরকারি দপ্তরকে গড়ে তুলেছেন একটি জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে। যেখানে ভূমি অফিসের ভোগান্তি, সাধারণ মানুষের হয়রানি ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, সেখানে ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের মাঝে প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এইচ তাসফিকুর রহমান। সর্বোপরি, এমন একজন কর্মকর্তাকে হারাতে চলেছি, যিনি ছিলেন ভূমি সেবা ও উন্নয়নে উপজেলা বাসীর জন্য আশীর্বাদ। এমন একজন কর্মকর্তা চলে যাওয়ার যে শূন্যতা, তা সহজে পূরণ হবার নয়। আমরা তার সার্বিক মঙ্গল ও উন্নতি কামনা করি।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুরশেদ বীন ফয়সাল (তানজির) বলেন, কে এইচ তাসফিকুর রহমান মহোদয় অত্র কার্যালয়ে যোগদানের পরবর্তী সময় থেকে ভূমি কার্যালয় দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে। সর্বস্তরের সেবাগ্রহীতারা কোনো রকম হয়রানি ও দুর্নীতি ছাড়া শতভাগ সেবা পেয়েছেন। একজন কর্মকর্তা কতটা আন্তরিকভাবে সরকারের সেবা নিশ্চিত করতে পারেন, তা এই কর্মকর্তাকে না দেখলে বুঝতাম না। তার সততা, নিষ্ঠা ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে তিনি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন, যা একটি কর্মকর্তার জন্য চরম প্রাপ্তি বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। তার চলে যাওয়া হয়রানিমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত ভূমি সেবা প্রত্যাশীদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তবে তার কর্মগুণের কারণে দামুড়হুদা উপজেলার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে সম্মানের সাথে মনে রাখবেন।
বিদায়ী এসিল্যান্ড উপজেলা বাসীর মঙ্গল কামনা করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, উপজেলার সকল ভূমি সেবাগ্রহীতার প্রত্যাশা পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কর্মক্ষেত্রে কাজের কোনো গাফিলতি করিনি। ভূমি সেবায় মানুষের ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করেছি এবং কার্যালয়কে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত রেখেছি। ফলে মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে সাংবাদিক সমাজ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি। এমন ভালোবাসার প্রতিদান আমি কখনো দিতে পারবো না। এখানকার সকলের ভালোবাসা আমাকে আজীবন ঋণী করে রাখবে। তবুও একজন মানুষ হিসেবে এসিল্যান্ড ও পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় যদি কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকি, আমাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সর্বোপরি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “ওরা বন্ধু সংঘ” এর সফলতা ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।


