দামুড়হুদায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের গৃহ নির্মাণ পরিদর্শন করলেন ইউএনও

দামুড়হুদায় সরকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মাাঝে দেওয়া ঘরের গৃহ নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন গৃহ হস্তান্তরের মহেন্দ্রক্ষণের প্রতীক্ষায়।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার বেলা ১ টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার অন্তর্ভুক্ত দর্শনা-কালিদাসপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও গৃহহীনদের মাঝে বরাদ্দকৃত ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায় তা পরিদর্শনে যান দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান।

পরিদর্শন কালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান নির্মাণ কৃত সকল ঘর ঘুরে দেখেন। এসময় তিনি লক্ষ্য করেন সরকারের দেওয়া একটি রঙ্গীন ঘরে ছোট্ট শিশু নিরব ঘুমিয়ে আছে। সরকারের দেওয়া ঘরের কাজ শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকেই শেষ পর্যন্ত মমতাময়ী দামুড়হুদা উপজেলার নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান কাজের তদারকি করে আসছিলো, যাতে করে কাজে কোন প্রকার দূর্নীতি না হয়।

কাজের ফাঁকে গত মার্চের প্রথম দিয়ে এ মমতাময়ী ছুটে গিয়েছিলেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত বাগদী সম্প্রদায়ের ছোট্ট শিশু নীরবের বাড়ীতে। ভাঙা ঘরে চাঁদের হাসি ছড়িয়ে দিয়ে লাফিয়ে এসেছিলেন তার কোলে। এরপর অসংখ্যবার তিনি সেখানে যাওয়াতে ছোট্ট শিশুর আর তার মধ্যে গড়ে উঠেন হৃদ্যতার বন্ধন।
বাগদী সম্প্রদায়ের সকল মানুষের চোখের ভাষা আজ নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের মুখস্ত। সেখানকার কেউ মা, কেউ বোন, কেউ মেয়ে ভেবে পরম আস্থা আর ভালোবাসায় তার চারপাশ জড়িয়ে রাখেন। পরিবার গুলো হয়তো কখনোই ভাবেনি এমন পাকা ঘর তারা পাবে এটা হয়তো তাদের কাছে কল্পনার মত ছিল।

গতকাল যখন এ মমতাময়ী নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার যখন ঘটনাস্থলে যান তখন দেখেন সুন্দর চকচকে নতুন ঘরে নীরব তার মায়ের শাড়ী দিয়ে তৈরী দোলনায় ঘুমিয়ে আছেন। তখন তার মনটা জুড়িয়ে যান। তিনি সে সময় ভাবেন এমনটিই তো চেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভেবেছেন আজকের পিছিয়ে থাকা নীরবরাই এভাবে সকল সরকারী সুযোগ সুবিধা পেয়ে, সামনে এগিয়ে যাবেন। আর তাদের হাতে পতপত করে উড়বে বিজয় কেতন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের সাথে মেবাইল ফোনে কথা হলে তিনি দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিনকে জানান, প্রথমেই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে যিনি এই গৃহহীন মানুষ গুলোকে নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কঠোর তদারকি আর আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে শেষ করেছি ৫ টি ঘরের নির্মাণ কাজ। শুধু শ্রম আর ঘাম-ই মিশে নাই এই ঘর তৈরীর পিছনে, জড়িয়ে আছে চরম মমত্ববোধ। শুরুর দিকে ভেবেছিলাম বাগদী পরিবারের অন্তর্দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ঘরের কাজ শুরু করতে পারবো তো? এটা একরকম চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছিলো আমার কাছে। ওদের চোখের চাহনীতে থাকতো ক্ষোভ, অপ্রাপ্তির আক্ষেপ আর ধিক্কার। বুঝতে কষ্ট হতো ওদের চোখের ভাষা।

কিন্তুু এখন গেলে মনে হয় ওরা যেন আমার আত্নার আত্নীয়। অদ্ভুদ এক মাায়া ঘিরে ধরেছে আমাকে। দায়িত্ব পালনের ফাঁকে কখন যে ওদের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছি বুঝতেই পারিনি। ঘরের কাজ সুষ্ঠুভাবে সুসম্পন্ন হওয়ায় মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি মান্যবর জেলা প্রশাসক মোঃ নজরুল ইসলাম সরকার স্যারের প্রতি যার নেতৃত্বে গৃহ নির্মাণ কাজ শেষ করতে পেরেছি। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আমার টিমের সকল সদস্যকে যাদের অপার শ্রম আর আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে শেষ হলে গৃহ নির্মাণ কাজ।

উপকারভোগীগণ অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি। এখন সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী উপকারভোগীবৃন্দের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহ হস্তান্তরের মহেন্দ্রক্ষণের প্রতীক্ষায়।