দামুড়হুদায় তিনটি ছানাসহ মা বাঘ আটক

দামুড়হুদায় আহত অবস্থায় বিলুপ্ত প্রায় মেছো মা বাঘ সহ তিনটি ছানা আটক করা হয়েছে। আহত মেছো বাঘ সহ ছানাদের দেখতে উৎসুক জনতার ভীড় লক্ষ করা যায়। বাঘ ও ছানাদের চিকিৎসার জন্য দর্শনা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে নেওয়া পথিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে মা বাঘটির।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬ টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি ইউনিয়ন জয়রামপুর তারিনিপুর গ্রামের মাজের মাঠে ভুট্টার খড়ির গাদার নিচে মা মেছোবাঘ ও তার তিনটি ছানা অবস্থান করছিলেন।
খড়ির গাদা থেকে খড়ি আনতে যান তোয়াক্কেলের ছেলে রফিকুল ইসলাম ও মৃত. বানু মন্ডলের ছেলে এসময় তারা মেছোবাঘটিকে দেখতে পান। তারা ঐ সময় আরো তিনটি ছানা কে দেখেন। মেছোবাঘটি পিছুন ঘুরে বসে থাকা অবস্থায় রফিকুল মা বাঘটিকে কাঠের বাটাম দিয়ে মাজায় আঘাত করলে বাঘটি মারাত্মক আহত হয়।
এসময় তারা বাঘ ও বাঘের ছানাদের নিয়ে গ্রামের একটা বাঁশ ঝাড়ের নিচে রেখে দেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহে পৌঁছান স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকার সংবাদকর্মীরা। মেছোবাঘ আটকের খবর টি সংবাদ কর্মীর মাধ্যমে জানানো হয় উপজেলা প্রাণী সম্পদ ও বন বিভাগকে।
খবর দেওয়ার ১ ঘন্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছান উপজেলা বন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন ও বাগান মালি হুমায়ন আহমেদ। বর্তমানে ছানা তিনটি উপজেলা বন কর্মকর্তা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, সকাল ৬ টার দিকে মাজের মাঠে গাদা দিয়ে রাখা রফিকুলদের ভুট্টার খড়ি জসিমের পাট্টিলার যোগে মাঠ থেকে বাড়ি আনতে গিয়ে খড়ির গাদার নিচে মা মেছোবাঘ সহ তিনটি ছানা দেখতে পান। এসময় ভুট্টা খড়ির গাদা থেকে খড়ি নিতে গেলে রফিকুল ও জসিম দেখতে পান মেছোবাঘ ও তার তিন ছানাকে। পরবর্তীতে এক সাংবাদিক ভাই দামুড়হুদা বন বিভাগে মোবাইল করলে, বন বিভাগ থেকে কর্মকর্তারা আসলে মেছোবাঘ ও তার তিনটি ছানাকে উদ্ধার করে দর্শনা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে নিয়ে যান।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মা মেছোবাঘ ও তার তিনটি ছানা কে উদ্ধার করে প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে নেওয়া পথিমধ্যে মা মেছোবাঘটির মৃত্যু হয়। মাজা ও পিঠে মারাত্মক ভাবে পিটিয়ে আঘাত করার ফলে লাঞ্চে আঘাত লেগে বাঘটির মৃত্যু হয়।
উপজেলা বন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন জানান, মেছোবাঘ বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত। এসময় ভুট্টা সহ বিভিন্ন ফসল কাটা সহ মাঠ-ঘাটে পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে এ প্রাণীর বাসস্থান সংকট হওয়ার ফলেই হয়তো তারা ভুট্টার খড়ি গাদার নিচে অবস্থান করছিলেন। মেছোবাঘটির ক’ একদিন আগেই বাঘটির তিনটি ছানা জন্ম হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে মা মেছোবাঘটির মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে তিনটি ছানা আমাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। আমাদের পক্ষ থেকে উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। আজ খুলনা ওয়াইল্ড লাইনে নেওয়া হতে পারে।