নিরন্ন – সীমান্ত মনির

আমার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করলে দেখবেন
পাকস্থলীর অভিশাপে আমার মৃত্যু হয়েছে
আমার রক্ত মিথ্যা বলবে না
তাকে প্রশ্ন করুন
সে বলবে
তার কণিকায় কণিকায় মিশে থাকা
ক্ষুধার বিষাক্ত ইতিহাস
নির্বাক মুখ মিথ্যা বলবে না
আমার চোখে চোখ রাখো
পড়ে নাও ক্ষুধার কাব্য
আমি দুভিক্ষের কালো পোস্টার
নিরন্ন পৃথিবীর জ্বলন্ত ইতিহাস

বাবু- তোমাদের সাজানো ভাতের থালার সামনে
আমি নিরন্ন মানুষ
বাবু- তোমাদের সাজানো ভাতের থালার সামনে
আমি ড্রেনের ময়লা জল চেটে নেওয়া
বুভুক্ষু কুকুর
বাবু- তোমাদের সাজানো ভাতের থালার সামনে
আমি আবর্জনা থেকে উড়ে আসা মাছি

আমি উঠে এসেছি
এগারোশ ছিয়াত্তর সন থেকে
নগ্ন শরীরে দাঁড়িয়েছি
তোমাদের খাদ্যের সামনে
মাটির ভাঙ্গা সানকি হাতে
আমি উঠে এসেছি ঊনিশশ তেতাল্লিশ থেকে
ছুটে বেড়াচ্ছি গলির পর গলি
রাজপথ

আমাকে কুকুর ভেবে চারটা ভাত দিন
আমাকে শুয়োর ভেবে
কাদার ভিতর ফেলে দিন অর্ধেক
শুকনো রুটি
আমাকে ডাস্টবিন ভেবে
ফেলুন নষ্ট ভাত
আমাকে নর্দমা ভেবে
ছুড়ে দিন পচা খাদ্য
আমাকে ড্রেন ভেবে
ঢেলে দিন ময়লা জল
আমাকে যদি পাথর বাঁধানো পায়খানা
ভাবতে ঘৃণা হয়
তাহলে ভাগার ভেবে
আমাকে দিন মলের চেয়েও দুর্গন্ধ অন্ন