নিশো-মেহজাবীনের প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য, মুঠোফোনেই শুটিং!

আফরান নিশো আর মেহজাবীন চৌধুরী। টিভি নাটকে দুজনের জনপ্রিয়তার মাপ সবারই জানা। হোম কোয়ারেন্টিনের সুবাদে এবার সেই মাপ ছাপিয়ে যাওয়ার সুযোগ হলো তাদের।

কাজল আরেফিন অমি এ দুজনকে ঘিরে উদ্যোগ নিলেন একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের। অভিনেতা হিসেবে আরও যুক্ত হলেন আরেক জনপ্রিয় মুখ জিয়াউল হক পলাশ। কাজল নিজেই লিখেছেন চিত্রনাট্য। কিন্তু শুটিং! সে তো সবার জন্যই বন্ধ। অমি, মেহজাবীন, আফরান আর পলাশ- সিদ্ধান্ত নিলেন যার যার ঘরে বসেই কাজটি করার। তাছাড়া গল্পটাও লকডাউনকে কেন্দ্র করে সাজানো। অন্যদিকে এক হয়ে আফরান-মেহজাবীন অসংখ্য নাটকে অভিনয় করলেও এবারই প্রথম চলচ্চিত্রে মুখোমুখি হবেন দুজনে, হোক না সেটা দৈর্ঘ্যে খানিক ছোট। প্রথম তো!

কিন্তু ক্যামেরা, লাইট, ট্রলি আর অ্যাকশন বলার লোক ছাড়াই শুটিং হবে কেমন করে! হলো। এসব ছাড়াই কাজটি শেষ পর্যন্ত শেষ হলো। নাম ‘ওয়েটিং’। দৈর্ঘ্য ১০ মিনিটের আগে পরে। শুটিং শেষে এখন চলছে সম্পাদনার কাজ।

কিন্তু শুটিং শেষ হলো কোন প্রক্রিয়ায়? নির্মাতা অমি জানান, তিনজন শিল্পীই নিজ নিজ মুঠোফোন দিয়ে নিজের দৃশ্যগুলো এক এক করে শুট করেছেন। যার যার মুঠোফোন থেকে সেই দৃশ্যগুলো সংগ্রহ করে পাঠানো হলো ভিডিও এডিটরের কাছে, যার বাসায় এডিট করার ব্যবস্থা রয়েছে।

কাজল আরেফিন অমি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘কাজটি স্বাভাবিক নিয়মে করতে পারলে ৮০ ভাগ জটিলতা কম হতো। তবে এটাও সত্যি, এই কাজটি করতে গিয়ে আমরা অন্য এক অ্যাডভেঞ্চারের ভেতরে ডুবে গেছি। আমাদের সবার নতুন একটা অভিজ্ঞতা হলো। যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবো, আমরা কেউ কোনোদিন ভাবিনি। আফটার অল অনেক ভালো একটি কাজ হতে যাচ্ছে বলেই আমার ধারণা।’

সিলভার স্ক্রিনের ব্যানারে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটির গল্প এগিয়েছে ফেসবুকে পরিচয় হওয়া দুটো মানুষকে ঘিরে। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দুজনে যেদিন সিদ্ধান্ত নেয় দেখা করার, সেদিনই পুরো শহর লকডাউন! মূলত এখান থেকেই সরল গল্পটিতে জটিল একটা বাঁক নেয়।

নির্মাতা অমির সঙ্গে ছবির অন্য অভিনেতা পালাশ (বামে)কাজটি করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে এর গল্পকার-নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি আরও বলেন, ‘আমরা যার যার ঘরে বসে ভিডিও কলে আলাপ করে করে পুরো কাজটি এখনও করছি। অনেকদিন পর একেবারে ডিটেইল চিত্রনাট্য লিখেছি। কারণ, শিল্পীর সামনে তো আমি থাকছি না। শিল্পীরা প্রত্যেকে নিজের মোবাইল দিয়ে নিজেরাই নিজেদের দৃশ্যগুলো ধারণ করেছেন। এরপর গুগল ড্রাইভে সেই ফুটেজ এক এক করে সংগ্রহ করা। সেগুলো আবার এডিটরকে পাঠানো। ভয়ংকর এক জটিলতার মধ্যে এখনও আছি। কাজটি খুবই কঠিন, কিন্তু বেশ মজারও। আমরা সবাই এই ছোট্ট কাজটি নিয়ে যে পরিমাণ সিরিয়াস, সেটি আগে কখনও ছিলাম বলে মনে হয় না।’

‘ওয়েটিং’ কাজটিকে নির্মাতা অবিহিত করছেন লকডাউন ফিল্ম হিসেবে। এটি চলতি সপ্তাহের মধ্যেই উন্মুক্ত হচ্ছে সিলভার স্ক্রিন নামের ইউটিউব চ্যানেলে।