প্রধানমন্ত্রীকে সেনাপ্রধানের ধন্যবাদ

সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী করোনা মোকাবেলায় যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আমরা সৈনিক এবং এই যুদ্ধে আমরা সর্বতোভাবে নিয়োজিত থেকে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশ ও জনগণের কল্যাণে আত্মনিবেদন করছি।

দেশের এই ক্রান্তিকালে সেনাবাহিনীকে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগের সুযোগ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বাহিনীর সকল সদস্যের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার সেনা সদর দফতরে বাহিনীর সব পর্যায়ের সদস্যদের নিয়ে দরবারে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বাহিনীর সব পদবির সদস্যের উদ্দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানসহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। ভিটিসির মাধ্যমে সব সেনানিবাসে তার বক্তব্য শোনানো হয়। সেনাবাহিনীপ্রধান বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন।

করোনা মোকাবেলায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সব চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী তথা সব পদবির সদস্যদের কঠোর পরিশ্রম ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির ভূয়সী প্রশংসা করেন সেনাপ্রধান।
একই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জনগণের সাহায্যে নিরলস প্রচেষ্টার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। সেনাবাহিনী প্রধান, জাতিগঠনমূলক কর্মকাণ্ড যেমন এন-৮ এক্সেস কন্ট্রোলড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে সেনাবাহিনীকে সুযোগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সব সেনাসদস্যকে নিষ্ঠার সঙ্গে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।

বক্তব্যে তিনি সেনাবাহিনীর সদস্যদের মনোবল অটুট রাখার লক্ষ্যে গৃহীত সময়োপযোগী কল্যাণমূলক পদক্ষেপ সবাইকে অবহিত এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। পাশাপাশি সেনাসদস্যদের আবাসন সমস্যা সমাধান, জীবন বীমা সুবিধা চালু করা, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্যদের কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন। ‘কঠোর প্রশিক্ষণই একজন সৈনিকের প্রকৃত কল্যাণ’- এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করে প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণ ও কার্যকরী প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য আজিজ আহমেদ সবাইকে নির্দেশ দেন। সেনাপ্রধান ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’-এর আলোকে একটি সক্ষম সেনাবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন দিক-নির্দেশনা ও নিরবচ্ছিন্ন সমর্থনের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ‘
শৃঙ্খলা সেনাবাহিনীর প্রাণ এবং আনুগত্য সেনাবাহিনীর চালিকাশক্তি’- এই চেতনাকে ধারণ করে সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে চেইন অব কমান্ড অনুসরণ করা এবং কোনো ধরনের গুজবে প্ররোচিত না হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

সেনাপ্রধান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যখনই দেশে কোনো ভালো কাজ হয়, তখনই স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল সেই কৃতিত্বকে মলিন করার অপচেষ্টা করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনী করোনাযুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় যখন ভালো কাজ করছে, তখন ওই কুচক্রী মহল সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে। সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীকে অতীতের ন্যায় এ ধরনের অপচেষ্টা-প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।

সেনাবাহিনী সর্বদাই সরকার, দেশের সংবিধান ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ।

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল্যবোধকে ধারণ করে সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষায় যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি। আইএসপিআর সুত্র-যুগান্তর