বজ্রপাত থেকে ক্ষতি এড়াতে নির্দেশনা মেনে চলি

মেহেরপুরে গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে আবু বক্কর সিদ্দিক (৪৫) নামে এক কৃষক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন দুই গৃহবধুসহ চার জন। নিহত আবু বক্কর সিদ্দিকের বাড়ি মেহেরপুর সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামে। এছাড়া আহতরা হলেন, সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আঙ্গুরা খাতুন (৩০) ও রাজাপুর গ্রামের কহিনুর বেগম (২৫), রাধাকান্তপুর গ্রামের কৃষক আহসান আলী (৪০) ও রহমতুল্লাহ ।
এছাড়া মেহেরপুর শহর সহ বেশ কিছু এলাকায় বজ্রপাতে গাছ পুড়েছে, বৈদ্যুতিক যন্ত্র বিকল হওয়ার মত ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বর্ষা মৌসুমে সবচেয়ে ভীতিকর বিষয় হচ্ছে বজ্রপাত। সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এই সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। যে সাবধানতাগুলো মেনে চললে বজ্রপাতে হতাহতের ঝুঁকি হৃাস পাবে।

সাবধনাতা মেহেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় ডা, জমির মো: হাসিবুস সাত্তার ফায়ার সার্ভিসের নির্দেশনাগুলো তার ফেসবুকে জনসাধারণ জন্য তুলে ধরেছেন। সময়োপযোগী এ বিষয়টি সবার সামেন তুলে ধরার জন্য তাঁকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।

তার পোস্ট থেকে নেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো- ১।বজ্রপাতের ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির ধাতব রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না। ২. প্রতিটি বিল্ডিংয়ে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন। ৩. খোলাস্থানে অনেকে একত্রে থাকাকালীন বজ্রপাত শুরু হলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে দূরে সরে যান। ৪. কোনো বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যান। ৫. খোলা জায়গায় কোনো বড় গাছের নিচে আশ্রয় নেয়া যাবে না। গাছ থেকে চার মিটার দূরে থাকতে হবে। ৬. ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার থেকে দূরে থাকতে হবে। বৈদ্যুতিক তারের নিচ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে। ৭. ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির প্লাগগুলো লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।৮. বজ্র পাতে আহতদের বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতো করেই চিকিৎসা দিতে হবে। ৯. এপ্রিল-জুন মাসে বজ্রপাত বেশি হয়। এই সময়ে আকাশে মেঘ দেখা গেলে ঘরে অবস্থান করুন। ১০. যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। ১১. বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি বা বারান্দায় থাকবেন না এবং ঘরের ভেতরে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকুন। ১২. ঘন-কালো মেঘ দেখা গেলে অতি জরুরি প্রয়োজনে রাবারের জুতা পরে বাইরে বের হতে পারেন। ১৩. উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, তার, ধাতব খুঁটি ও মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন। ১৪. বজ্রপাতের সময় জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করুন। ১৫. বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা, মাঠ বা উঁচু স্থানে থাকবেন না। ১৬. কালো মেঘ দেখা দিলে নদী, পুকুর, ডোবা, জলাশয় থেকে দূরে থাকুন। ১৭. বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন এবং নিজেরাও বিরত থাকুন। ১৮. বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠে থাকলে পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়ুন। ১৯. বজ্রপাতের সময় গাড়ির মধ্যে অবস্থান করলে, গাড়ির থাতব অংশের সঙ্গে শরীরের সংযোগ ঘটাবেন না। সম্ভব হলে গাড়িটিকে নিয়ে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। ২০. বজ্রপাতের সময় মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।

তাই আসুন, সাবধানতা অবলম্বন করি, অন্যকেও এই বিষয়গুলো জানানোর মধ্যে দিয়ে বজ্রপাতে ঝুকি হৃাসে এগিয়ে আসি।