
আজ ২১ সেপ্টেম্বর ভয়াল সেই দিন। ২০০০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টার দিকে দর্শনায় হঠাৎ ভারতীয় পানি ঢুকে পড়ে জন-জীবন তচনচ করে দেয়। ক্ষতিগ্রস্থ হয় প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
২১ সেপ্টেম্বর সেই ভয়াল দিনে দর্শনা শ্যাম্পুর পাইপ ঘাটের নিকট শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে দর্শনা শহরে পানি ঢুকে পড়ে। এই এলাকার মানুষ বন্যার পানি থেকে রক্ষা পেতে একটু উচু স্থানের দিকে ছুটে চলে। হাতের কাছে যা পাই, সেই টুকু সম্বল নিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে। তাতে কোন কাজ হয়নি। ফলে দর্শনা শহরের মানুষের, থালা-বাসন, গরু-ছাগল, ধান, চাল, গম, ছোলা, মশুরীসহ সম্পদ হরিয়ে নিঃস্ব হয়ে বাঁচানোর তাগিদে একটু উচু স্থান খুজে বেড়িয়েছে। ঘরে তোলা রবি ভেসে চলে যায়। বিশেষ করে দর্শনা পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়ন প্রায় ১৫/১৬ ফিট পানির নীচে তলিয়ে যায়।
এছাড়া দর্শনা শ্যাম্পুর, আজিমপুর, ঈশ্বরচন্দ্রপুর, পরানপুর গ্রামের মানুষ দর্শনা রেল ষ্টেশন ও রেল লাইনের উপর অবস্থান নেয়। রান্না করার মত কোন কিছুই সাথে করে আনতে পারেনি। ফলে তৎকালিন মেয়র মতিয়ার রহমান, পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনয়নের চেয়ারম্যান এস এম জাকারিয়া আলম ও হাউলি ইউনয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টু এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ ও এনজিও সংস্থাগুলো বানভাষী মানুষের সাহায্য ও সহযোগিতায় এগিয়ে আসে।
পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনয়নের বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার কাজের পাশাপশি এসব সংগঠন ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিক নৌকা নিয়ে পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনয়নের লোকজনকে উদ্ধার করে দর্শনা রেল ষ্টেশনে নিয়ে উদ্ধার কাজ অব্যহত রাখে। প্রশাসন এর পক্ষ থেকে স্প্রিড বোর্ড নিয়ে এসে গাছের ডালে, পাকা ঘরের ছাদ থেকে নারী-পুরুষ ও শিশুদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে দর্শনা রেল ষ্টেশনে।
এরপর দর্শনা ষ্টেশনে চলে বানভাসী মানুষের রান্না করা খাবার বিতরণ কর্যক্রম। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বানভাসী মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ কাজ চলে। এ সময় যে যা পারে তাই নিয়ে দর্শনাবাসী ছুটে আসে এবং বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এ বিষয়ে বানভাসী মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসা চেয়ারম্যান এস এম জাকারিয়া আলম বানবাসী মানুষের দুভোর্গের সম্পর্কে জানান।