
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার এক মাস পূর্ণ হলো আজ। গত মাসের আজকের তারিখে ভয়াবহ বিমান বিধ্বস্তে প্রাণ হারিয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী।
এ ঘটনার এক মাস পরেও ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া। এখনও আতঙ্কে দিন কাটছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
ওইদিন বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীদের স্মৃতিতে এখনও বন্ধুদের আত্মচিৎকার তাড়া করছে। তাই মানসিকভাবে এখনো কিছুটা বিপর্যন্ত শিক্ষার্থীরা। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে, একমাস পূর্তির দিন আজ স্কুলটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ওই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত হন মোট ৩৪ জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক। এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ২৪ জন। এর মধ্যে তিনজন শিক্ষক, তিনজন অভিভাবক ও ২৭ জন শিক্ষার্থী।
গত এক মাস ধরে আহতরা অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় দিন পার করছেন।
রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে যারা ভর্তি রয়েছেন তাদের বেশিরভাগের শরীরই আগুনে পুড়ে গেছে। কারো কারো অর্ধেকেরও বেশি অংশ পুড়ে গেছে।
জানা গেছে, শরীরে অর্ধেকেরও বেশি পোড়া নিয়ে ভর্তি রয়েছে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র নাভিদ নাওয়াজ। গত এক মাস ধরে নাওয়াজ সুস্থ হওয়ার জন্য নিজের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে। আর তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক থাকছেন বাবা মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘একমাস হাসপাতালের আইসিইউতে ছেলেকে রেখে কোথাও যেতে পারছি না। এই সময়ের মধ্যে প্রতিটা মুহূর্ত একটা নতুন অভিজ্ঞতা। ডাক্তারও বলতে পারছে না ছেলে আমার ভালোর দিকে যাচ্ছে, না খারাপের দিকে যাচ্ছে। ডাক্তাররা শুধু বলে আপনারা আল্লাহকে ডাকেন’।
এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি শিক্ষার্থীরা
মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরা এখনো ফিরতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর মাথার ওপর দিয়ে বিমান যায়, তখনই ভয়ে বুক ধড়ফড় করে। লেখাপড়ায় মন বসে না। মনে হয় আবার কোনো বিপদ আসছে। স্কুলে আসতে মন চায় না।
তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মানসিক সেবা স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা লেফলেন্যান্ট কর্নেল (অব.) নুরুন নবীর সাংবাদিকদের বলেন, মানসিক সেবা স্বাস্থ্য সেন্টার খোলা হয়েছে স্কুলে। আমরা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীদের মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে কাউন্সেলিং কার্যক্রম চালু রয়েছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরো সময় লাগবে।
সূত্র: কালের কন্ঠ।