মুজিবনগরে করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনের ভয়ে কমিটির পলায়ন

মেহেরপুর জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন-কাফনের ক্ষেত্রে মুজিবনগরের জন্য আলেমদের নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই কমিটির ৫ জন সদস্য করোনা আক্রান্ত বা করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করার কথা। কিন্তু আজ বুধবার দুপুরে মুজিবনগরের ভবের পাড়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে অপারগতা প্রকাশ করে।

পরে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওসমান গনির উদ্যোগে লাশটি দাফন করা হয়।

এ নিয়ে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওসমান গনি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো –

অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছি……

পাঁচজন আলেমই অপারগতা প্রকাশ করে চলে গেলেন!!!!!

মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া গ্রামে আজ একজন করোনা সন্দেহভাজন ব্যক্তি মারা গেলেন। ইনালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। পরীক্ষার জন্য আজ তাঁর স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে কিন্তু ফলাফল আসেনি।

মেহেরপুর জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন-কাফনের ক্ষেত্রে মুজিবনগরের জন্য আলেমদের নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে । ইতঃপূর্বে একদিন আমার অফিসে ডেকে তাদের ব্রিফিংও করা হয়েছে।

মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফনের জন্য আজ ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক গঠিত পাঁচজনসহ মোট ছয়জন আলেমকে ডাকা হয়। করোনা সন্দেহে মৃত্যুর কথা শুনে পাঁচজন সদস্যই অপারগতা প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন “আগে থেকে তাঁদের বলা হয়নি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে দাফন করতে হবে।” আমি তাদের অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলাম, যে ব্যক্তি মারা গেছেন তিনি হয়ত করোনা আক্রান্ত না, শুধু সন্দেহের কারণে স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া এই কমিটিতো শুধু করোনার কারণে মৃত্যু বা করোনা সন্দেহ মৃত্যু ব্যক্তিদের দাফনের জন্য গঠিন হয়েছে। তথাপিও নানা অজুহাতে তারা একজন-দুইজন করে আমার কক্ষ ত্যাগ করে চলে যান। আমরা তখন খুব বিপদে পড়ে যাই এবং অত্যন্ত নিরুপায় হয়ে পড়ি।

তখন ডিসি স্যারের সাথে আলোচনাক্রমে আমি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আল্লাহর উপর ভরসা করে তিনজন একসাথে লাশ দাফনের জন্য যাত্রা করি। হুজুরদের জন্য আনা পিপিই স্থানীয় মৃত ব্যক্তির আত্মীয়দের মধ্য থেকে চার যুবককে পরানো হয়।

জানাজা পড়ানোর জন্য আমরা নিজেরাই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু শেষ মুহুর্তে মাওলানা তৌহিদুল ইসলাম, ইমাম, গোপালনগর জামে মসজিদ এসে জানাজায় ইমামতি করেন। অনেক ধন্যবাদ হুজুরকে।

অতঃপর আমরা তিনজন কর্মকর্তা ও পাঁচজন যুবক মিলে লাশ দাফন করলাম।

শুধু একটি বিষয় অজানা রইলো,পাঁচজন আলেম আমাদের কি শিক্ষা দিয়ে গেলেন তা বুঝতে পারলাম না।

মেপ্র/এমএফআর