
পেঁয়াজের ভরা মৌসূমে পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ও কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে মানববন্ধন করেছেন মুজিবনগরের পেঁয়াজ চাষীরা। এসময় এলাকার প্রায় শতাধিক পেঁয়াজ চাষী উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর মাঠে শতাধিক পেঁয়াজ চাষী এই মানববন্ধন করেন।
চাষীরা বলেন, পেঁয়াজ মসলা জাতীয় ফসল। এখন আমাদের দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে তাঁতে আমাদের দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব। কিন্তু পেঁয়াজের এই ভরা মৌসুমে সরকার ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে থাকেন। ভরা মৌসুমে বাইরের দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে চাষির উৎপাদিত পেঁয়াজের মূল্য নিশ্চিত না করলে আগামীতে পেঁয়াজ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে কৃষক। আবারও মানুষকে চারশ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনতে হবে। তারা আরও বলেন, পেঁয়াজের বর্তমান বাজার দরে চাষীরা এক বিঘা জমির পেঁয়াজ চাষ করে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
বক্তব্য রাখেন, পেঁয়াজ চাষী মনিরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, সোহরাব হোসেন, বায়োজিদ হোসেনসহ অন্যান্যরা।
পেঁয়াজ চাষী মিনারুল ইসলাম বলেন, এবছর আমি ৬ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। ছয় বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে যে বাজার দর তাতে পেঁয়াজ বিক্রি করে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা উঠবে। আমরা চাই, পেঁয়াজের এই ভরা মৌসুমে বাইরের দেশ থেকে আমাদানি বন্ধ করে আমাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করুক সরকার।
চাষি সামিদুল ইসলাম জানান, এবছর আমি ১০ বিঘা জমিতে সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ করেছি। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমাদের কাছ থেকে ফঁড়িয়ারা ২০/২২ টাকা করে কিনে নিচ্ছেন। অথচ, এক কেজি পেঁয়াজ উৎপাদন করতে কৃষকের খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। কৃষক তাঁর উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য না পেলে আগামীতে পেঁয়াজ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তখন বাইরের দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে। মানুষকে তিন চার শ টাকা কেজি দরে কিনতে হবে। তাই পেঁয়াজের এই ভরা মৌসুমে বাইরের দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করতে হবে। এছাড়া কৃষকের পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
জানা গেছে, দারিয়াপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষী লাল্টু হোসেন ৮ বিঘা, সোহরাব হোসেন ৭ বিঘা, লোটন হোসেন ৬ বিঘা, মধু মিয়া ১০ বিঘা, একরামুল হোসেন ৫ বিঘা, স্বপন মিয়া ১০ বিঘা, সামিদুল ইসলামের ৯ বিঘাসহ এলাকার কয়েক হাজার কৃষক সুখ সাগর পেঁয়াজের চাষ করেছেন।
উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে জেলায় এবছর পাঁচ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৫ হাজার ২৮০ মেট্রিকটন।


