
মেহেরপুরের বাজারগুলোয় আবারও কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে বেড়ে ২০০ থেকে ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছরের এই সময়ে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে চাষি ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদার চেয়ে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। কৃষকদের কাছ থেকেই বেশি দামে কাঁচা মরিচ কিনতে হচ্ছে। এতে প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও।
আর মরিচ চাষিরা বলছেন, এবার বৃষ্টিতে গাছের পাতা কুঁকড়ে যাওয়ায় কাঁচা মরিচের ফলন আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। বেশি দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করলেও ফলন কম হওয়ায় লোকসানে পড়েছেন তাঁরা।
আজ শুক্রবার সকালে গাংনী উপজেলা কাঁচামাল আড়তের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে মরিচের সরবরাহ কম। এ কারণে খুচরা বাজারেও কাঁচা মরিচ কম। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৯০ থেকে ২২৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর খুচরা বাজারে তা ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমে মরিচের এমন দামে অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় কিনেছেন তাঁরা।
গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী শাহাবুল ইসলাম আজ সকালে কাচা মরিচ ১৯০ টাকা থেকে ২৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এই সময়ে মরিচ প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কিনছি।
তিনি আরও বলেন, আড়তেই মরিচের সরবরাহ কমেছে। এ কারণে খুচরা বাজারেও কাঁচা মরিচ কম। তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজার থেকেই ১৯০ থেকে ২৪৫ টাকায় মরিচ কিনছি। গাড়িভাড়া দিতে হয়; এর পাশাপাশি কিছু মরিচ নষ্টও হয়। আমরা এই মরিচ বরিশাল মোকামে পাঠিয়ে থাকি। আগামীকাল লাভের কথা বলা যাবে।
গাংনী কাঁচাবাজারের আড়ৎ মালিক হাফিজুর রহমান ভিজা বলেন, এখন কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম, তাই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। মাঠের অধিকাংশ মরিচ ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। এখন যে দু এক জায়গায় মরিচ ক্ষেত অবশিষ্ট আছে সেগুলোর দাম বেশী।
দেশের মরিচ উৎপাদনের জেলাগুলোর মধ্যে মেহেরপুর জেলা অন্যতম। জেলার তিনটি উপজেলার সবখানেই ব্যাপকভাবে মরিচের আবাদ হয়। তবে এবার গেলো কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে দাম বেশি হলেও ফলন কম হওয়ায় চাষিরা লাভবান হতে পারছেন না।
গাংনী উপজেলার সবজি গ্রাম সাহারবাটির ময়নাল হোসেন বলেন,গ্রামের চাষি ইব্রাহিম মিয়া বলেন, এ বছর তিনি তিন বিঘা জমিতে মরিচের চাষ করেছেন। অতিরিক্ত খরায় এবং সবশেষ টানা বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক মরিচ গাছের পাতা কুঁকড়ে গেছে। এতে গাছের ফুল ঝরে যাচ্ছে। ফলে মরিচও কম ধরছে। এবার দাম কিছু বেশি হলে ফলন কম হওয়ায় লাভ খুব একটা হচ্ছে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামসুল আলম বলেন, অতিরিক্ত খরা ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের কারণে মরিচগাছের পাতা কুঁকড়ে যেতে পারে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়া ব্যাকটেরিয়ানাশক ওষুধ ছিটানোর মাধ্যমে মরিচগাছের এ রোগ দূর করা সম্ভব।