মেহেরপুরে কৃষকদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছে কাশ্মিরী আপেল কুল চাষ

গতানুগতিক আবাদ থেকে লাভবান না হওয়ায় ফরিদ উদ্দীন নামের এক কৃষকের সম্ভাবনাময়ী কাশ্মিরী কুল চাষে সাড়া ফেলেছে মেহেরপুরের গাংনীর চাষিদের মাঝে। দেখতে সুন্দর, সু-স্বাদু ও অধিক উৎপাদনশীল এই কাশ্মিরী কুল চাষ শুধু চাষী নয় বেকার যুবকদেরও হতে পারে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।

ইতোমধ্যে এলাকার কৃষক ও যুবকেরা কুল চাষের পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস। গতানুগতিক আবাদ থেকে ফিরে নতুন চাষে লাভবান হবে বলে আশায় বুক বেধেছেন জেলার অনেক কৃষক।

কুল চাষের বিষয়ে জানতে চাইলে জানা গেছে,বছর পাঁচেক আগের কথা। মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার যুগিন্দা গ্রামের ব্যবসায়ি ফরিদ উদ্দীন তার ব্যবসায় একের পর এক লোকশান গুনছিলেন। স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি শুরু করেন পেঁয়ারা চাষ। এতে কিছুটা লাভবান হলেও ফল চাষের উপর ঝুঁকে পড়েন তিনি।

গেল বছর তিনি পরীক্ষামূলক কাশ্মিরী কুল চাষ শুরু করেন। এক বিঘা জমিতে কুল চাষে খরচ হয় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা। ওই কুল বিক্রি করেন প্রায় এক লাখ টাকা। উৎপাদন খরচের দ্বিগুন লাভ হওয়ায় চলতি বছরে তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে কুল চাষ শুরু করেন।

প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় লাল ও বাদামী রঙয়ের কুল শোভা পাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে এবং সঠিক ভাবে বাজারজাত করতে পারলে এবার তিনি পাঁচ লক্ষাধিক টাকা আয় করবেন বলে আশাবাদী।

এদিকে কুল চাষসহ নানা ফল চাষে চাষিদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় এনজিও সংস্থা পিএসকেএস এর কৃষি ইউনিট বিভাগ। পলাশী পাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির কৃষি ইউনিট বিভাগ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে মাঠ দিবসের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছেন বলেও জানান স্থানীয় কুষক।

কাশ্মিরী কুল চাষি জুগিন্দা গ্রামের ফরিদ উদ্দীন জানান, থোকায় ধোকায় যে কুল দোল খাচ্ছে সেটি শুধু তারই নয় এলাকার শিক্ষিত ও বেকার যুবকদের কর্ম সংস্থানের দ্বার উন্মোচনে আশা যোগাচ্ছে।

ধন মিয়ার সফলতা দেখে এ বছর প্রায় চাষী উৎসাহিত হয়ে প্রায় পনের বিঘা জমিতে এ কুল চাষ করেছে। তবে তারা এ বছর লাভবান হলে পরের বছর কৃষকের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

স্থানীয় অন্য এক চাষি আল আমিন হোসেন জানান, তিনি খোজ নিয়ে ফরিদ এর কুল বাগান দেখতে এসেছেন। তিনি পরামর্শ ও কুৃলের চারা সংগ্রহ করে কাশ্মিরি কুলের আবাদ করবেন।

শুধু আল আমিন হোসেন নয়, এলাকার অনেক বেকার যুবকেরা কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কুল চাষে আগ্রহী করতে ফরিদ হোসেন সকলকে পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম শাহাবুদ্দিন জানান, অপার সম্ভাবনাময়ী এ কুল চাষ অত্যান্ত লাভজনক। স্বল্প পরিশরে ও স্বল্প খরচে অনেক লাভ করা সম্ভব তাছাড়া এ কুলে পোড়া মাকড়ের আক্রমন নেই তাই কোন প্রকার কীটনাশকের ব্যবহারও হয়না । এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও নেই।

মেপ্র/ আরপি