মেহেরপুরে পেঁয়াজের ঝাঁজে কাঁদছে ক্রেতা

গত সপ্তাহ থেকে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কয়েক দফা। এর মধ্যেই বাংলাদেশে পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। ফলে সোমবার দেশের তিনটি প্রধান স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোনো পিঁয়াজ আসেনি।

এদিকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের খবরে বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে একদিনের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ দাম বেড়ে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা।

আমদানি বন্ধের খবরে রাজধানীসহ দেশের বাজারগুলোয় ক্রেতারা পেঁয়াজ কিনতে ভিড় জমায় আর খুচরা বিক্রেতারা ছোটেন পাইকারি বাজারে। এই হুলুস্থুল পরিস্থিতিতে বিক্রেতারা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বুধবার মেহেরপুরের বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। অথচ গতপরশু দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

খুচরা ব্যবসায়ী কালাম জানান, হঠাৎ করেই পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। গতকাল পাইকারিতে যে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা ছিল তা আজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা হয়ে গেছে।

তহবাজার ব্যবসায়ীসমিতি সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ মেহেরপুর প্রতিদিন কে জনান, ইন্ডিয়ার সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি ছিল হঠাৎ করে রাতা-রাতি L,C পেঁয়াজ বন্ধ করে দিয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম আবারও অস্থিরতা বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে । এমতা অবস্থায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। নির্ধারিত মূল্য বেঁধে দেওয়া, নতুবা আমাদের দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে তারা সুযোগ গ্রহণ করতে চাইবে।

আমি আর একটি কথা বলতে চাই । যেহেতু আমি এই কাঁচামালের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি, আমাদের দেশে দেশীও পেঁয়াজ বিভিন্ন জেলায় উৎপাদন হয়, এবং সে জেলাগুলি নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, ওই জেলাগুলি নির্ধারিত একটি দাম বেঁধে দেওয়া উচিত। ওখান থেকে অন্য জেলায় যে সমস্ত পেঁয়াজ যাবে, তার কষ্টক্যারিং খরচ এবং ব্যবসায়ীদের রুটি-রুজির লভ্যাংশ রেখে, অন্য জেলায় আলাদা দাম নির্ধারণ করা। তাতে করে সব জেলার মাল সব জেলায় যেতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও সুযোগ সুবিধা রাখার জন্য অনুরোধ করছি।

গত সপ্তাহ থেকে ভারতে পিঁয়াজের দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও দাম বেড়ে ৬০ টাকার দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয় আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৪০ টাকা থেকে উঠে আসে ৬০ টাকায়।

পাইকারি ব্যবসায়ী ইয়ারুল ইসলাম জানান, গত এক সপ্তাহ আগে সুখসাগর পেঁয়াজ এর দাম ছিলো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে তা বেড়ে এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। তিনি আরো জানান চাষীদের কারণে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে চাষিরা আরো বেশি দাম পাওয়ার আশায় এখন পেঁয়াজ বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। তাই বাজারে পেঁয়াজ এর সংকট দেখা দিচ্ছে এ কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সোমবার দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করেছি ৬০ টাকা। আজ পাইকারিতে দাম ৮৫ টাকা।

গত বছরও ভারত হুট করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছিল। এতে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল হু হু করে। সেসময় খুচরা বাজারে রেকর্ড ৩০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। এবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পরপরই দেশের খুচরা বাজারে দাম বাড়তে শুরু করেছে।

তানভীর জানান, দেশী জাতীয় পেঁয়াজ গত এক সপ্তাহ আগে ৫০-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিলো তা এখন বেড়ে ৮০ টাকায়।

গতবার যে খেলা দেখিয়েছে এবারও সেই পেঁয়াজ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিফটের প্যাকেট জাত হয়ে সেই গত বারের মতো অবস্থান তৈরি হবে। একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাবে। অন্যদিকে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।