মেহেরপুরে প্রথম ধাপে ২৬ দুস্থ পরিবার পাচ্ছেন নতুন ঠিকানা

এম এফ রুপক:
প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ মুজিব জন্মশতবর্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৯ লাখ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে সেমিপাকা টিনশেড ঘর। সারা দেশে ৬৪ জেলার তৃণমূল পর্যায়ে তালিকা করে ছিন্নমূল ও দুস্থ পরিবারকে এ ধরণের বিশেষ ঘর দেওয়া হচ্ছে। প্রথম ধাপে ২৩ জানুয়ারি ৬৯ হাজার ৯শ ৪ পরিবারকে হস্তান্তর করা হবে। সমগ্র বাংলাদেশে একযোগে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর হস্তান্তর উদ্বোধন করবেন।

মেহেরপুর জেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওয়াত ক তালিকা ভুক্ত প্রথম ধাপে ২৬ টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে এই ঘর। যদিও ২৮ টি ঘর হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু জমি সংক্রান্ত জটিলতায় গাংনীতে ২টি ঘর সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই এই সমস্যার অবসান হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

মেহেরপুর সদরে ১৬টি, গাংনী উপজেলায় ৬টি ও মুজিবনগর উপজেলায় ৪টি। “আশ্রয়ণের অধিকার-শেখ হাসিনার উপহার” এই স্লোগানে মেহেরপুর জেলায় ভূমি ও গৃহহীন মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবাসন উপহার হিসেবে দেয়া খাস জমিতে গৃহ নির্মাণের কাজ করছে মেহেরপুরের তিন উপজেলা প্রশাসন। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে গৃহ নির্মাণ করছে প্রশাসন। নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন মেহেরপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

মেহেরপুর জেলায় ১২৩ জন ভূমিহীনদের তালিকা থেকে প্রথম ধাপে ২৬ জন ঘর পাবে আগামী ২৩ জানুয়ারি। এছাড়াও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এর নিজস্ব উদ্যোগে আরও কিছু ভূমিহীন পরিবার ঘর পাবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান। এ সময় তিনি বলেন, মেহেরপুর জেলার তিন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ঘর নির্মাণের কাজগুলো সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রত্যেক ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত করে ওই জমির ওপর ঘর তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

পরে আরও পরিবহন খরচ বাবদ ৪ হাজার টাকা বৃদ্ধি করেছে সরকার। এই টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২ ফুট প্রস্থের ঘরে রয়েছে দু’টি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী থেকে একটি করে টিউবওয়েল ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরাঞ্জন চক্রবর্তী জানান, গাংনী উপজেলায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম ধাপে ৬ টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হবে। আরও দুইটি ঘর জমি সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে আছে। ঘর গুলো নির্মাণ করা হয়েছে, ধানখোলায় ২টি, ষোলটাকায় ২টি, বামন্দীতে ১টি ও কাজীপুরে ৩টি। ইতোমধ্যে ৬টি ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ২ টির কাজ হস্তান্তরের আগেই আশা করছি শেষ হয়ে যাবে।

মুজিবনগর ও মেহেরপুর সদরের দায়িত্বে থাকা পকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার জানান, মেহেরপুর সদরে ১৬টি ও মুজিবনগর উপজেলায় ৪টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। মেহেরপুর সদরের মধ্যে আমঝুপি-খোকসায় ৮টি ও কুতুবপুর-গহরপুরে ৮টি ও মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুরের চারা বাগান পাড়ায় ৪টি।

মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম জানান, উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ১৬টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৮টির কাজ চলমান আছে। আশা করছি খুব দ্রুত সম্পন্ন করতে পারবো। প্রত্যেক সুবিধাভোগীর নামে সরকারি ২ শতাংশ জমির বন্দোবস্ত দলিলসহ ঘরের চাবি আগামী ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে।

মেপ্র/এমএফআর