মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিডির পক্ষপাতমূলক আচরণ

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সার ডিলারদের মধ্যে বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে।

বরাদ্দটি বিসিআইআইসি ও বিএডিসির বীজ ও সার ডিলরাদের মধ্যে বন্টন করার নির্দেশ থাকলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মেহেরপুর জেলার উপ-পরিচালক (ডিডি) শংকর কুমার মজুমদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে শুধুমাত্র বিসিআইসি সার ডিলারদের মধ্যে বরাদ্দ দেন। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে বিএডিসির বীজ ও সার ডিলারদের মাঝে।

এতে জেলার জন্য বরাদ্দ সার একটি সিন্ডিকেটের কাছে কুক্ষিগত হবে, যা সব এলাকার কৃষকরা ঠিকমত সারও পাবেনা, এমন অভিযোগ বিএডিসি’র সার ও বীজ ডিলারদের।

এনিয়ে গতকাল রবিবার সকালের দিকে বিএডিসি সার ডিলাররা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিডি’র কাছে আসলে বরাদ্দের বিষয়ে ভুল স্বীকার করে পূনরায় সমবন্টনের আশ্বাস দেন তিনি।

জানা গেছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বিএডিসির আমদানীকৃত ভর্তুকির আওতাভূক্ত নভেম্বর/২২ মাসে জেলার জন্য অতিরিক্ত উপ বরাদ্দের ১০০০ মেট্রিক টন ডিএপি ও ১০০০ মেট্রিক টন এমওপি সার বরাদ্দ দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার অধিশাখা।

এই উপ বরাদ্দকৃত সার বিসিআইসি সার ডিলার ও বিএডিসি বিজ ডিলার যারা সার ডিলার হিসেবে নিবন্ধিত তাদের অনুকুলে বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ না মেনে উপ-পরিচালক গোপনে শুধুমাত্র বিসিআইসির ৩১ জন ডিলারদের বরাদ্দ দেন।

বরাদ্দকৃত এই সার ভর্তুকির নীতিমালা অনুসারে ডিলারের প্রতিটন ক্রয় মূল্য যথাক্রমে টিএসপি ২০ হাজার টাকা, এমওপি ১৩ হাজার টাকা ও ডিএপি ১৪ হাজার টাকা মুল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিলার পর্যায়ে সব্বোর্চ্ছ খুচরা বিক্রয়মুল্য প্রতি কেজি টিএসপি ২২ টাকা, এমওপি ১৫ টাকা ও ডিএপি ১৬ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

গাংনীর বিএডিসির বীজ ও সার ডিলার তৌাহিদ মূর্শেদ অতুল ও তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতি বছর সার বরাদ্দ নিয়ে সরকারের নিয়মনীতি মেনে বাজারজাত আসছি। অথচ, চলতি বছরের নভেম্বর মাসের চাহিদার অতিরিক্ত বরাদ্দের সার মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিএডিসির ডিলারদের বঞ্চিত করে শুধুমাত্র বিসিআইসি সার ডিলারদের বরাদ্দ দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে আমরা রবিবার সকালের দিকে জেলা কৃষি অফিসের উপপরিচালকের সাথে দেখা করার পর সেটার সংশোধন করে আমাদেরও বরাদ্দ দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএডিসির কয়েকজন বীজ ও সার ডিলার অভিযোগ করেন, বিসিআইসির সার ডিলারদের দাবীর প্রেক্ষিতে জেলা কৃষি উপ-পরিচালক জেলায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্তিম সার সংকট তৈরীর উদ্দ্যেশেই আমাদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র বিসিআইসি সার ডিলারদের বরাদ্দ দেন। এখানে মোটা অংকের অর্থনৈতিক লেনদেন হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।

আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এর প্রতিবাদ জানানোর পর সেটার সমাধান করবেন বলে উপ-পরিচালক আশ্বাস দিয়েছেন। সার ডিলার মিজানুর রহমান, শাহিন হোসেন বলেন, এই সার সব ডিলারকে বরাদ্দ দিলে এলাকার সব ধরনের কৃষকরাই পাবেন। জেলার মাত্র ৩১ জনকে বরাদ্দ দিলে জেলার সব এলাকায় এই সার পৌছাতো না।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) শংকর কুমার মজুমদার বলেন, শুধুমাত্র বিসিআইসি সার ডিলারদের মধ্যে অতিরিক্ত চাহিদার সার বরাদ্দ ভুল হয়েছিল। এটা করেছিল উপজেলা কৃষি অফিসারবৃন্দ। আমার কাছে আসার পর এটির সমাধান করা হয়েছে। শুধুমাত্র বিসিআইসি সার ডিলাররা নয়, বিএডিসি বীজ ও সার ডিলারদেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।