মৌবনের রেখা খাতুন পেলেন বিভাগীয় পর্যায়ে জয়ীতার সম্মাননা

কুষ্টিয়ার বিশ্বস্ত খাবার প্রতিষ্ঠান মৌবনের রেখা খাতুন পেলেন খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে জয়ীতার সম্মাননা।

গতকাল মঙ্গলবার খুলনা অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে তার হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।

খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে ‘নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছে যে নারী’ ক্যাটাগরিতে জয়িতা রেখা খাতুনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। খুলনা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কার্যালয় আয়োাজিত বিভাগীয় পর্যায়ের ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সৈয়দ রবিউল আলম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হোসেন আলী খন্দোকার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. হাবিবুল হক খান এবং খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর খুলনা কার্যালয়ের উপপরিচালক নার্গিস ফাতেমা জামিন।

অনুষ্ঠানে রেখা খাতুনসহ আরও বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা ক্রেস্ট, সনদ ও পুরস্কারের নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
প্রসঙ্গত, জীবনযুদ্ধে সফল এক জয়িতা নারী রেখা খাতুন কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই বিয়ে হয়ে যায় তার। বছর গড়াতেই সন্তানের মা হন তিনি। স্বামীর সংসারে নেমে আসে চরম দুর্দিন ও হতাশা। পরিবারে সাংসারিক ঝগড়াকলহ চলতে থাকতো। কয়েক বছরের মাথায় আবারো গর্ভবস্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয় রেখা খাতুনের।

সংসার ভেঙে গেলে ফিরে আসে বৃদ্ধ পিতা-মাতার বাড়িতে। সেখানে দরিদ্র ও অসহায় পিতার সংসারে অসহায় ও একাকীত্ব জীবনযাপন করতে থাকেন। শুধু তাই নয়, বাবা মায়ের বড় সন্তান হওয়ায় রেখার দায়িত্ব যেন আরো বেড়ে যায়। নিজের সন্তান ও ছোট ভাইবোনদের মানুষ করতেই রেখার শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। নিজেকে স্বাবলম্বী করতে নয়, একবেলা দুমুঠো আহার তুলে দিতে রেখা শুরু করেন ঝিয়ের কাজ।

হঠাৎই কুষ্টিয়ার খাবার প্রতিষ্ঠান মৌবনে কাজ নেয় সে। তারপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে সেখানে রান্নার কাজ দেখে প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সাফিনা আঞ্জুম জনির ঐক্যান্তিক প্রচেষ্টায় তাকে রাধুনীর কাজে সম্পৃক্ত করা হয়। ধীরে ধীরে সে দক্ষ রাধুনী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলে।

এভাবেই জীবনযুদ্ধে নিজে এখন স্বাবলম্বী হয়েছে। ছোট ভাইবোনদের বিয়ে দিয়েছেন। নিজের দুই মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। সংসারে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই রয়েছে রেখা খাতুন।

মেপ্র/আরপি