মৌমাছির দংশনে মারা গেল বিলুপ্তপ্রায় অর্ধশতাধিক পেঙ্গুইন

দক্ষিণ আফ্রিকার সৈকতে বিলুপ্তপ্রায় ৬০টির বেশি পেঙ্গুইনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে, যেগুলোর শরীরে মৌমাছির কামড়ের দাগ ছাড়া অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।

কেপটাউনের কাছাকাছি দক্ষিণ আফ্রিকার ওই সৈকতে ৬৩টি বিলুপ্তপ্রায় আফ্রিকান পেঙ্গুইনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। খবর বিবিসির।

দেশটির ন্যাশনাল পার্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পেঙ্গুইনের ওপর মৌমাছির আক্রমণের বিষয়ে এবারই প্রথম জানা গেল। এই এলাকায় প্রতি বছর অন্তত ৬০ হাজার পর্যটকের ওপর হামলা করে থাকে এসব মৌমাছি।

দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল পার্কস এজেন্সির মেরিন বায়োলজিস্ট ড. অ্যালিসন কোক। জানান, সাধারণত পেঙ্গুইন আর মৌমাছি সহাবস্থান করে থাকে। বিরক্ত না করলে মৌমাছি সাধারণত কাউকে কামড় দেয় না।

আমরা ধারণা করছি, হয়তো এই এলাকায় তাদের কোনো মৌচাকে আঘাতের ঘটনা ঘটেছে। ফলে ঝাঁক বেঁধে মৌমাছিগুলো বেরিয়ে গেছে এবং আগ্রাসী হয়ে পেঙ্গুইনদের কামড়াতে শুরু করে।

ময়নাতদন্তে দেখা গেছে, এসব পেঙ্গুইনের চোখের আশপাশে অনেক কামড়ের দাগ রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে মৃত মৌমাছিও পাওয়া গেছে। এটি আসলে বিরল একটি ঘটনা।

দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলীয় পাখি সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের পশু চিকিৎসক ডেভিড রবার্টস বলেন, এ রকম ঘটনা আর ঘটবে বলে আমরা মনে করি না, এটি আসলে অপ্রত্যাশিত একটি ব্যাপার।

ছোট আকারের জন্য আলাদা পরিচিতি রয়েছে আফ্রিকান পেঙ্গুইনের। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার উপকূল ও দ্বীপে এগুলো বাস করে। যদিও এ রকম কিছু কিছু পেঙ্গুইন উত্তরের দিকে গ্যাবন পর্যন্তও দেখা গেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ ন্যাচার (আইইউসিএন) জানিয়েছে, এই প্রজাতির পাখির সংখ্যা খুব দ্রুত কমছে। বাণিজ্যিকভাবে মাছ ধরা আর পরিবেশগত অস্থিতিশীলতা এর জন্য দায়ী বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

‘অন্তরীপের মৌমাছি’ নামে পরিচিত এই মৌমাছিগুলোও এখানকার ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্রের অংশ, যারা বেশ কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকাজুড়ে বসবাস করে।

ন্যাশনাল পার্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার আরেকটি পেঙ্গুইনের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল কাছাকাছি স্থানে, যেটির শরীরেও একই রকম মৌমাছির দংশনের চিহ্ন রয়েছে।