রাশিয়াকে গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বন্ধের হুমকি জার্মানির

রাশিয়ার বিরোধী দল নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির উপর বিষাক্ত নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগের ঘটনার জেরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল জার্মানি। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপর ক্ষুব্ধ জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল বলেন, পুতিন যে ভাষা বোঝেন আমরা সেই ভাষায় কথা বলছি। নাভালনির উপর নার্ভ এজেন্ট কেন প্রয়োগ করা হয়েছে তার জবাবদিহি করতে হবে পুতিনকে। এর প্রতিবাদে আমরা রাশিয়ার সঙ্গে গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প স্থগিত রাখার বা বাতিল করার কথা ভাবছি।

মর্কেলের এই বিবৃতিতে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে ইউরোপের রাজনীতিতে। রাশিয়া বিবৃতি দিয়েছে, নাভালনির অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট পুতিন কোনওভাবেই জড়িত নন। সন্দেহের বশে পুতিনের উপর মিথ্যে দায় চাপাচ্ছেন চ্যান্সেলর মের্কেল। তাছাড়া গ্যাস পাইপলাইনের মতো অর্থনৈতিক প্রকল্পের সঙ্গে এই রাজনৈতিক ঘটনার কোনও তুলনা বা যোগ টানা যেতে পারে না।

যদিও রাশিয়ার বিবৃতি খারিজ করে জার্মানি জানিয়েছে, নাভালনি কোমাচ্ছন্ন এবং গুরুতর অসুস্থ। কিন্তু পাইপলাইন প্রকল্প স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে জার্মানি।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেলের মুখপাত্র স্টিফেন সেইবার্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নাভালনির শরীর থেকে নেওয়া একাধিক নমুনায় সোভিয়েত জমানার রাসায়নিক হাতিয়ার নার্ভ এজেন্ট নভিচকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। জার্মান সেনার একটি গবেষণাগারে ওই স্যাম্পলগুলি বারবার পরীক্ষা করে এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার মানে ইঞ্জেকশন বা খাবারের সঙ্গে মারাত্মক শক্তিশালী ওষুধ নভিচক দিয়ে অসুস্থ করে দেওয়া হয় নাভালনিকে। নাভালনির উপর এমন হামলা খুবই ন্যক্কারজনক। আমরা এই ঘটনার তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এরপর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে বহু কোটি ডলারের গ্যাস পাইপলাইনের মতো যৌথ প্রকল্প বাতিল করার দাবি জানাতে থাকেন জার্মান এমপি’রা।

উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে বিমানে মস্কো ফিরছিলেন নাভালনি। মাঝ আকাশে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। উপায় না দেখে ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। নাভালনি ঘনিষ্ঠদের প্রাথমিক ধারণা, টমস্ক বিমানবন্দরে তার চায়ে বিষ মেশানো হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, নাভালনির স্নায়ুতন্ত্র ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। কোমায় আচ্ছন্ন হন তিনি। সেটা বিষের প্রভাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। এরপর নাভালনির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকায় তাকে জার্মানির বার্লিনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষার পর বিষ প্রয়োগের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন। বর্তমানে তার অবস্থার অবনতি না হলেও এখনও গভীর কোমায় আছন্ন রয়েছেন তিনি।