সাকিব-এবাদতে ১৮৬ রানেই থামলো ভারত

প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নেমে সাকিবের ঘূর্নি জাদু আর এবাদত হোসেনের গতির সামনে মাত্র ১৮৬ রানেই গুটিয়ে গেছে ভারত। টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলো বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান নিজের ঘূর্নিজাদুতে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। সাকিবের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই নিজের গতি আর সুইংয়ের মিশ্রণে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন পেসার এবাদত হোসেন।

সাত বছর পর বাংলাদেশ সফরে এসেছে ভারত। সফরে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ বেলা ১২ টায় মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে টাইগারদের নেতৃত্ব দেওয়া লিটন দাস।

বাংলাদেশের ১৫তম ওয়ানডে অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করেছেন টাইগার বোলাররা। সাকিবের ঘূর্ণি আর এবাদতের গতিতে দিশেহারা হয়ে যায় ভারতের ব্যাটসম্যানরা। একমাত্র লোকেশ রাহুল ছাড়া দাঁড়াতে পারেননি কেউই। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত।

ইনিংসের শুরুতেই মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে বোলিং শুরু করান নতুন অধিনায়ক লিটন দাস। মুস্তাফিজের নিয়ন্ত্রিত প্রথম ওভার থেকে ভারত তোলে মাত্র ১ রান।

এরপর হাসান মাহমুদ আর মেহেদি হাসান মিরাজ বোলিংয়ে এসেও চেপে ধরে ভারতের দুই ওপেনারকে। ৬ষ্ঠ ওভারে মিরাজের বলে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। মিরাজকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করেন শিখর ধাওয়ান, ব্যাটের কান ছুঁয়ে গিয়ে স্ট্যাম্পে আঘাত করে বল। মাত্র ৭ রান করেই সাজঘরের পথ ধরেন ধাওয়ান।

২৩ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর রোহিত শর্মা আর তিনে নামা বিরাট কোহলি মিলে চেষ্টা করছিলেন ভারতের ইনিংস এগিয়ে নিতে। পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভার শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৮ রান তোলে ভারত।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরই আক্রমণে আসেন সাকিব আল হাসান। নিজের প্রথম ওভারেই জোরা আঘাত হানেন সাকিব। তিন বলের মধ্যে রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলিকে সাজঘরে ফেরান সাকিব। ওভারে দ্বিতীয় বলে ২৭ রানে থাকা রোহিতকে বোল্ড করার পর এক বল বিরতি দিয়ে ফেরান কোহলিকেও ফেরান সাকিব। ৯ রানে থাকা কোহলিকে ফেরাতে এক্সট্রা কাভারে দুর্দান্ত এক জ্যাচ নিয়েছেন অধিনায়ক লিটন দাস।

৪র্থ উইকেট জুটিতে ভারতকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন শ্রেয়াস আইয়্যার আর লোকেশ রাহুল। আইয়্যারকে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে ৫৬ বলে ৪৩ রানের জুটি ভাঙেন এবাদত হোসেন।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে ওয়াশিংটন সুন্দরকে নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন রাহুল। ৭৫ বলে ৬০ রান তুলে ফেলেন জুটিতে। তখনই আবার দৃশ্যপটে আসেন সাকিব। ১৯ রানে থাকা সুন্দরকে এবাদতের ক্যাচ বানিয়ে আউট করে জুটি ভাঙেন সাকিব।

এরপরের ওভারে এবাদতকে যেন প্রতিদান দেন সাকিব নিজে। এবাদতের বলে শূন্য রানে তজাকা শাহবাজের দারুণ এক ক্যাচ নেন সাকিব।

পরের ওভারেই শার্দুল ঠাকুর আর দীপক চাহারকে ফিরিয়ে নিজের পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব। ১৫৬ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলা ভারতকে একাই এগিয়ে নিচ্ছিলেন রাহুল।

শেষ পর্যন্ত ৭৩ রান করে এবাদতের বলে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দেন রাহুল। তার ৭০ বলে ৭৩ রানের ইনিংসে ছিলো ৫ চার আর ৪ ছক্কা। এরপর ৪২তম ওভারে মোহাম্মদ সিরাজকে ফিরিয়ে ভারতকে ১৮৬ রানেই অলআউট করে দেন এবাদত।

বাংলাদেশের হয়ে ৩৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন সাকিব আর ৪৭ রানে ৪ উইকেট তুলে নেন এবাদত।