সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ একজনের মৃত্যু

আজ ৭০ বছর বয়স্ক একজন সিঙ্গাপুরিয়ান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ২৭ দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন৷ এই নিয়ে সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হলো।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২১ শে মার্চ শনিবার ৭৫ বয়স বয়স্ক একজন সিঙ্গাপুরীয়ান ও ৬৪ বছর বয়স্ক একজন ইন্দোনেশিয়ান মারা গিয়েছিলেন।

এদিকে, সিঙ্গাপুরে করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি ব্রেকডাউন এর সম্ভাবনা কমানোর জন্য সরকার প্রায় প্রতিদিন নতুন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে।এর মধ্যে কয়েকটি তুলে ধরছি।

১।প্রথম দিকে নেয়া পদক্ষেপগুলোর মাঝে অন্যতম ছিল মাস ফেভার স্ক্রিনিং। সেসময় অনেক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনার প্রবেশপথে মাস টেম্পারেচার স্ক্রিনিং মেশিন স্থাপন করা হয় যেটার মাধ্যমে সয়ংক্রিয়ভাবে বডি টেম্পারেচার কম্পিউটারে চলে যেত।

২। প্রতিটি অফিসে কর্মরত স্টাফদের দিনে দুইবার ননকন্টাক্ট থার্মোমিটারের মাধ্যমে টেম্পারেচার রিডিং নিয়ে রেকর্ড রাখা হয়।

৩। কোথাও কোন করোনা আক্রান্ত রোগি সনাক্ত হলে সেই যায়গাটিকে ডিজইনফেকশন করা হয়।

৪। তার পরবর্তী ধাপে অনেক অফিসে স্টাফ রোটেশন করা হয়। স্টাফদের দুইভাগে বিভক্ত করে এক দল যখন অফিসে কাজ করবে অন্যদল তখন বাসায় থেকে কাজ করবে।

৫। কন্টাক্ট ট্রেসিংঃ ভাইরাসে আক্রান্ত রুগী গত কয়েকদিনে কোন কোন স্থানে গিয়েছে কাদের সাথে মিশেছে এই ধরনের সম্ভাব্য তালিকা করে তাদের আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়।

৬। প্রথমে এয়ারপোর্টে নির্দিষ্ট কয়েকটি শহর থেকে আগত যাত্রীদের আগমন এবং ট্রাঞ্জিট নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় । এই আওতার বাহিরে রাখা হয় যারা স্থায়ীভাবে বাস করে বা রেসিডেন্টদের।

৭। একসময় বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের মাঝে আক্রান্ত বেড়ে গেলে সব ধরনের ভিসা বাতিল করা হয় এবং লোকাল রেসিডেন্টদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোরান্টিন এর বিধি জারি করা হয়।

৮। সন্দেহবশত হাসপাতালে করোনা চেক আপের জন্য সরাসরি না গিয়ে জিপিদের কাছে যাওয়ার জন্য বলা হয় যাতে হাসপাতালে অহেতুক সবাই গিয়ে ভিড় না করে। জিপিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কোন রোগির মাঝে ফ্লুর সিম্পটম দেখা গেলে সেই রোগিকে ৫ দিনের মেডিক্যাল লিভ দেয়ার জন্য । আর রোগিকে বলা হয়েছে পরবর্তি চেক আপের জন্য সেইম জিপির কাছে যাওয়ার জন্য। অনেক অফিসে তাদের কোন স্টাফ ৫ দিনের মেডিক্যাল লিভে গেলে গত কয়েকদিনে সেই স্টাফ যাদের সংস্পর্শে এসেছে তাদের ৫ দিন সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।

৯। আর একটি ধাপ হল বিগত ১৪ দিনের ট্রাভেল হিস্টরি রেকর্ড ঘোষনা দেয়া।

১০। এর সাথে গৃহিত আর একটি পদক্ষেপ হচ্ছে Whatsapp এর মাধ্যমে প্রতিদিনের আক্রান্ত এবং সুস্থ হয়ে ফেরত যাওয়াদের সংখ্যা জানিয়ে দেয়া।

১১।এর পরের ধাপে শুরু হয় সোশাল ডিস্টেন্সিং । প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে , খাবার দোকানে বাধ্যতামূলক এক মিটার দূরত্ব মেনে চলা।

১২। মাস গেদারং এর স্থানগুলো যেমন সিনেমা এবং অন্যান্য বিনোদন সেবার স্থান বন্ধ ঘোষনা করা।

১৩। স্কুল এবং অফিস ব্যতীত অন্য যে কোন স্থানে ১০ জনের বেশী জমায়েত নিষিদ্ধ করা।

১৪। গতকাল থেকে শুরু হল সুপারশপ এবং অন্য সবধরনের দোকানে একসাথে নির্দিষ্ট সংখ্যক এর বেশী ক্রেতা প্রবেশ করতে না দেয়া। আগামী সপ্তাহ থেকে স্কুল , কলেজ এবং অন্যন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে একদিন স্টাডি ফ্রম হোম শুরু হবে।

১৫।আজ থেকে অপ্রয়োজনে শপিংমলে যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। অনলাইন শপিংয়ের মাধ্যমে কেনাকাটা উৎসাহিত করা হচ্ছে ।

এর পাশাপাশি জনসাধারনকে সচেতন করার জন্য প্রচুর উদ্দ্যোগ নেয়া হয়। সেই সাথে নির্দেশনা না মেনে চললে বড় অংকের জরিমানা এবং জেল এ পাঠানোর আইন জারি করা হয়।