
হাসিনার সরকার কখনো জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দেয়নি। হাসিনার সরকার কখনোই জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হননি। এমনকি হাসিনা তার নিজের দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কথাও শোনেননি। অর্থাৎ, এক দল, এক দেশ, এক নেতা এই পদ্ধতিতে হাসিনা চলেছেন বলেই আমরা তাকে ফ্যাসিবাদী বলে থাকি।
হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ১৫ বছর ৮ মাস যাবৎ নিরবিচ্ছিন্ন আন্দোলন করেছে। অনেকেই আজ প্রশ্ন করে, বিএনপি ১৫ বছর আন্দোলন করেও হাসিনার কিছু করতে পারেনি, তাই গত আন্দোলনের কোনো কৃতিত্ব নাকি বিএনপি পাবে না।
আমিও তাদের বলতে চাই পিতা-মাতা সন্তানকে জন্ম দিল, মানুষ করল, লেখাপড়া শিখাল, সন্তান চাকরি পেল আর বিয়ের পরে শ্বশুর-শাশুড়ি বলছে, ও বেটা তো আমাদের সন্তান, তোমরা কিছু না।
বিএনপির অবদানকে যারা অস্বীকার করতে চান, ২০২৪ সালের আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার অবদানকে যারা অস্বীকার করতে চান, তারেক রহমানের অবদানকে যারা অস্বীকার করতে চান, তারা আসলে সেই সমস্ত সন্তানের মতো যারা বিয়ের পরে নিজের জন্মদাতা পিতা-মাতাকে অস্বীকার করে থাকে।
আজ শনিবার সকালে মেহেরপুর সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সকল কথা বলেন খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু।
তিনি আরো বলেন, বৃষ্টি হলে বাংলাদেশের ছাতা ধরে সেই দলের নেত্রী হচ্ছে পলাতক হাসিনা। আরো একটি দল আছে, যারা লাহোর কিংবা করাচিতে বৃষ্টি হলে বাংলাদেশের ছাতা ধরেন সে দলটি কারা, আপনারা ভালো জানেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের কী ভূমিকা ছিল, সেটাও আপনারা জানেন। আরেকটি দল আছে চীনে বৃষ্টি হলে তারা বাংলাদেশে ছাতা ধরেন। আবার কিছু রাজনৈতিক দল আছে মস্কোতে বৃষ্টি হলে বাংলাদেশের ছাতা ধরেন।
আমরা একমাত্র শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকরা, আমরা একমাত্র বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সৈনিকরা, আমরা একমাত্র তারেক রহমানের সৈনিকরা যারা অন্য দেশে বৃষ্টি হলে বাংলাদেশের ছাতা ধরি না, বাংলাদেশের বৃষ্টি হলে বাংলাদেশে ছাতা ধরি।
তিনি বলেন, অনেকেই বলার চেষ্টা করেন, “একই সাপের দুই বিষ, নৌকা ও ধানের শীষ।” যারা বলেন, তারা ২০১৮ সালে আমাদের সাথে জোট করে যে কয়টা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তখন তাদের মার্কা কী ছিল? ধানের শীষ ছিল না? তখন কি সেটা বিষ মনে হয়নি? অর্থাৎ, তাদের যখন প্রয়োজন, যে খাদ্য খায় সেটা তাদের কাছে অমৃত আর যখন প্রয়োজন হয় না, তখন সেটা তাদের কাছে বিষ।
আমরা দেখেছি ১৯৪৭ সালে যখন ভারত এবং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলো, সেই দলটি বলল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার নেই, আমরা সব ভারতের সাথে থাকব। আবার ১৯৭১ সালে দেখলাম যখন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ, বর্তমানে বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষ যুদ্ধে লিপ্ত হল, তখন তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করল।
জাতীয় ও দলিয় পতাকা উত্তোলন ও শান্তির প্রতিক কবুতর উড়িয়ে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠে সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক জাভেদ মাসুদ মিল্টন।
জেলা বিএনপি’র সদস্য মোঃ ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. কামরুল হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আমিরুল ইসলাম, সদস্য মোঃ আলমগীর খান ছাতু, মোঃ আনছারুল হক, মোঃ হাফিজুর রহমান, মোঃ খাইরুল বাশার ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেন।
বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সম্মেলনটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।