অনেক উন্নয়নের মধ্যেই রয়েছে কিছু সমস্যা! (ভিডিও সহ)

মেহেরপুর পৌরসভার শাহাজি পাড়ার একাংশ, বড় বাজার পাড়ার একাংশ, মুখার্জী পাড়া, থানা পাড়ার একাংশ, হালদার পাড়া, মালোপাড়া, সরকারি বালিকা বিদ্যালয় পাড়া ও বোসপাড়া নিয়ে গঠিত ২নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে, মেহেরপুর সদর থানা, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, কসাইখানা, ভৈরব প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি কিন্ডার গার্টেন স্কুল।ওয়ার্ডের মোট ভোটার সংখ্যা বতর্মান ৩৭৮০ জন। ওয়ার্ডে পরপর দুই বারই কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন যুব লীগ নেতা আল মামুন।
০২ ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরির্দশন করে দেখা গেছে, সড়ক নির্মাণ, ড্রেণ নির্মান ও কসাইখানা নির্মাণসহ বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এর মধ্যে কিছু সড়ক নিচু হওয়ার কারনে বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। ড্রেণ গুলো নিয়মিত পরিস্কার না করায় পানি নিস্কাশন হয় না।
মুখার্জীপাড়ার শাওন বলেন, ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় আমরা মেইন সড়কে ময়লা রেখে আসি পৌরসভা থেকে এসে প্রতিদিনের ময়লা প্রতিদিন নিয়ে যায়। এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো। রাস্তার মাঝখান দিয়ে পাইপ ড্রেন করা সেকারণে পানি জমে না।
তানভির বলেন, পাড়ার ভিতরে ড্রেনগুলোর অবস্থা ভালো না। অনেকদিন ধরে পরিষ্কার করে না। তাছাড়া ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় আমার দোকানের সামনে ময়লা আবর্জনার স্তুপ হয়েছিল। অনেক দিন বলার পর অল্প অল্প করে পরিষ্কার করছে।

নীলমনি হল রোড়ের এক দোকানী বলেন, দোকানের সামনে ভাঙাচুরা ড্রেন। পরিষ্কার না করার কারণে অনেক জায়গায় বুজে গেছে। বৃষ্টির সময় ড্রেনের পানি উপচে পড়ে। নোংরা দূর্গন্ধময় পানি মাড়িয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। দূর্গন্ধে লোকজন দোকানে বসতে পারে না।
হালদারপাড়ার কুতুব উদ্দিন বলেন, পাড়ার অলিগলির রাস্তাগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে বাড়ির ব্যবহৃত ও বৃষ্টির পানিতে জলবদ্ধতা হয়ে থাকে। নোংরা দূর্গন্ধময় পানি মাড়িয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। ময়লা আবর্জনা ফেলার ডাষ্টবিনের অভাবে সড়কের পাশে দূর্গন্ধময় ময়লা আবর্জনায় স্তুুপ হয়ে পড়ে থাকে। একদিন দুদিন পরপর পৌরসভার গাড়ি এসে ময়লা নিয়ে যায়। ড্রেনগুলো অনেক দেরিতে পরিষ্কার করে। এখানে মসজিদের রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে মেরামত করা হয়নি যার কারণে মুসল্লিদের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ভালো। তাছাড়া যেকোন সমস্যা কাউন্সিলরকে জানালে তিনি সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেন।
বোসপাড়ার রুমি খাতুন বাসিন্দা বলেন, এলাকার একাংশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো হলেও আমাদের অংশে রয়েছে পানি নিষ্কাশনের সমস্যা। দৈনন্দিন ব্যবহৃত ও সামান্য বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পাড়ায় কোনো ডাষ্টবিন নির্মাণ না করায় স্থানীয়রা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনায় ফেলে। ফলে মশা-মাছির উপদ্রপ বাড়ছে। বাড়ির সামনে খোলা জায়গায় আবর্জনা ফেলার কারণে দূর্গন্ধময় পরিবেশে কষ্ট করেই বসবাস করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে , ২নং ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা। এলাকার লোকজন যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে। তবে পৌরসভা থেকে ময়লা আবর্জনা এক দুইদিন পর পর এসে নিয়ে যায় বলে জানান স্থানীয়রা। ড্রেনের ঢাকনা ও পরিষ্কার না করায় ড্রেনে জমা পানি থেকে দূর্গন্ধ ও মশার উপদ্রপ সৃষ্টি হচ্ছে।

কিছু সমস্যা থাকলেও রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়ন লক্ষ্য করা গেছে। তবে অচিরেই যতটুকু সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধানের প্রক্রিয়াও চলমান বলে জানিয়েছেন ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আল মামুন।
ওয়ার্ডের উন্নয়ন চিত্র:
হালদারপাড়া মন্দির থেকে বদন হালদারের বাড়ি পর্যন্ত ঢালাই ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ। একই এলাকায় খোকনের বাড়ি হতে আনন্দ হালদারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ, শহিদুলের বাড়ি হতে মহন হালদারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ। আখড়াপাড়া বাবু দাসের বাড়ি হতে ভৈরব পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ। বাবু দাসের বাড়ি হতে শংকরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ। মালোপাড়া রুমির বাড়ি হতে তুহিনের বাড়ি রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ। মালোপাড়া কবির পুলিশের বাড়ি হতে বুলবুলির বাড়ি পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ। বোসপাড়া কাচ বাবুর বাড়ি হতে ভৈরব নদী পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ। বোসপাড়া শফির মোড় হতে পুষ্পর বাড়ি পর্যন্ত পিচের রাস্তা নির্মাণ। কসাইখানা হতে ইমাদুলের বাড়ি পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা ও কসাইখানা বিল্ডিং নির্মাণ। কুষ্টিয়া টেইলার্স হতে মুখার্জীপাড়া শেষ পর্যন্ত পাইপ ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ। বোসপাড়া মোবাইল স্টেশন থেকে কাশেমের বাড়ি পর্যন্ত ঢালাই ড্রেন ও পিচের রাস্তা নির্মাণ। পার্কের সামনে হতে ইমাদুল মিয়া ও আশকার মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সম্পূর্ণ। আশকার মিয়ার বাড়ি হতে ভৈরব পর্যন্ত ঢালাই ড্রেন ও পিচের রাস্তা। হালদারপাড়ার আখড়া থেকে জিরুর দোকান পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা। সাত্তার মিয়ার মোড় থেকে হালদারপাড়ার সমস্ত রাস্তা ও ড্রেন ঢালাই করণ। ফয়েজ ষ্টোর হতে বোসপাড়া শফির মোড় পর্যন্ত পিচ করণ। বড় বাজারের মোড় হতে ক্রিসেন্ট ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা পিস করণ। শাহাজিপাড়ার মোড় হতে জামাল মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত ঢালাই ড্রেন ও রাস্তা পিচ করণ। শাহাজিপাড়ার লুৎফরের বাড়ি হতে আবুলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পিচ করণ
মেহেরপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আল মামুন বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় নানান সমস্যা ছিলো যা আমি অধিকাংশ সমাধানের চেষ্টা করেছি এখনও যতটুকু সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জনগণের স্বার্থে ও ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য যেসব কাজ করার কথা ছিল বা ওয়াদাবদ্ধ ছিলাম তা আমি অনেকেই সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। এরপরও কিছু কিছু সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানের প্রক্রিয়াও চলমান। আমি আমার এলাকার উন্নয়ন ও জনগণের যতটুকু সেবা দেয়া সম্ভব তা দেয়ার চেষ্টা করেছি।