অবসরে যাবার আগেই স্বপদে থাকতে এক কর্মকর্তার জোর তদবির

চাকুরীতে নিয়োগ পাওয়া এবং অবসরে যাওয়া একটি নিয়মতান্ত্রিক বিধান রয়েছে। যা সকল চাকুরী জীবির ক্ষেত্রে প্রযজ্য। বিধিবিধান থাকা সত্বেও দর্শনা কেরুজ চিনিকলের এক কর্মকর্তার অবসরে যাবার আগেই স্বপদে বহাল থাকতে জোর তদবির শুরু করে দিয়েছেন। ফলে আলোচনা সমালোচনা শরু হয়েছে রাষ্টিয় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে চুক্তিভিত্তীক নিয়োগ পাওয়ার বিধান রয়েছে কি না ? আর থাকলেও তার কোন দায়বদ্ধতা থাকে কি না ? বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ যেন গুরুত্বরসহকারে বিবেচনা করেন এনটাই দাবি সচেতন মহলের।

দর্শনা কেরুজ চিনিকলে ৫টি বিভাগের মধ্যে ব্যবস্থপক প্রশাসনের পদটি খাতা কলমে ছোট হলেও বাস্তবে অনেক ক্ষমতার চেয়ার। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) পদে আসিন আছেন শেখ মোঃ শাহাব উদ্দিন। আগামী ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ সালে চাকুরী কালীন অবসরে যাবার কথা রয়েছে তার। অবসরে যাবার আগেই পুন:রায় স্বপদে চুক্তিভিত্তীক নিয়োগ পেতে জোর তদবির শুরু করে দিয়েছেন তিনি। যা চাকুরীর বিদি বহিরভূত।

একটি সূত্র জানিয়েছে চেয়ার ও পদবীটি ৫ম গ্রেডের হলেও চিনিকলের যত কারিশমা এখানে। এ চেয়ার থেকেই সবকিছু নিয়ন্ত্রীত হয়ে থাকে। যেখানে চাকুরীরর বেতনের পাশাপাশি থাকে অনেক কিছু। শেখ শাহাব উদ্দিন পিতার চাকুরীর সুবাদে ২০/১২/১৯৮৯ সালে কনিষ্ঠ করণিক পদে প্রথম যোগদান করেন। এর পর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তার। জোষ্ঠ করণিক, প্রশাসন বিভাগের গোপনীয় সহকারী, সহ-সমন্বয় কর্মকর্তা, ডিস্টিলারী সেলসের জুনিয়র অফিসার, ডিস্টিলারী বিভাগের সহ-ব্যবস্থপক, বিএনপি মতাদর্শের হওয়ায় রাজনৈতীক দ্বন্দে ২০১১ সালে রংপুর সুগার মিলের সহ-ব্যবস্থপক বানিজ্যিক বিভাগে কয়েক মাসের জন্য বদলি। তদবির করে পুনরায় ডিস্টিলারী বিভাগের সহ-ব্যবস্থাপক হিসাবে ফিরে আসা, বানিজ্যিক বিভাগে উপব্যবস্থাপক, উপ-ব্যবস্থাপক প্রশাসন সর্বশেষ ৪/৩/২০২১ সালে বর্তমান পদে ব্যবস্থাপক প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। চিনিকলের কয়েকজন প্রবীন শ্রমিক নেতার সাথে আলমডাঙ্গা উপজেলার গড়চপড়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে শেখ মো: শাহাব উদ্দিন মেধা খাটিয়ে করণিক থেকে সিড়ি বেয়ে চিনিকলের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) পদে পদন্নতি পেয়েছেন।

১৯৬৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করা শেখ শাহাব উদ্দিনের বিধি মোতাবেক আগামী ১৪ ডিসেম্বরে নিয়ম অনুযায়ী চাকুরী কালীন অবসরে যাবার কথা রয়েছে। অবসরে যাবার আগেই নিজের চেয়ার ধরে রাখতে ২৪/০৯/২০২২ ইং তারিখ চুক্তিভিত্তিক নিয়োজনের জন্য আবেদন করেছেন। যেখানে শিল্পমন্ত্রী গত ৯/১০/২২ ইং তারিখে সুপারিশ করেছেন। ফলে তার আবেদনের ফাইলটি উপরের দিকে না গিয়ে নিচের টেবিলে ফেরত এসেছে। এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন করপোরেশনের ৫ সদস্য বিশিষ্ট বোর্ড। ফলে অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে এটা কি আদৌও সম্ভব। আর হলে কোন আইনের বলে ? তবে সবকিছু পরিস্কার হবে ১৪ ডিসেম্বর।

অপর দিকে অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, একটি রাষ্টিয় প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে চুক্তিভিত্তীক নিয়োগ পাওয়া ব্যাক্তির খুব একটা দায়বদ্ধাতা থাকে না। ফলে প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর কোন ক্ষতি সাধিদ হলে এর ক্ষতিপূরণের দায়ভার বহণ করবে কে ? আর এভাবেই যদি চাকুরীর মেয়াদ বাড়ানো যায় তাহলে অনেকেই হাটবেন এ রাস্তায়। কেউ ছাড়তে চাইবেন না তার জায়গা। বিষয়টি নিয়ে চিনিকল এলাকাই বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। এ ব্যাপারে সদরদপ্তরের এক কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাকুরীর মেয়াদ এভাবে বাড়ানো গেলে অনেকেই সফল হতো। যা বিধানে নেই তার পিছনে ছুটা মানে বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।