
মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটি আস্থার নাম, একটি নির্ভরতার প্রতীক। তাঁর ব্যাট থেকে আসা প্রতিটি রানই যেন দলের জন্য অক্সিজেন। তবে যখন সেই রান আসে একটি বিশেষ মাইলফলকের ম্যাচে এবং তা আবার একটি সেঞ্চুরি—তখন তা নিছক একটি ব্যক্তিগত অর্জন থাকে না, তা হয়ে ওঠে জাতীয় ইতিহাসের অংশ। সম্প্রতি নিজের শততম টেস্টে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি হাঁকানোর ঘটনা ঠিক তেমনই এক মহাকাব্যিক মুহূর্তের জন্ম দিয়েছে। তার এ ঐতিহাসিক উৎযাপনে মেহেরপুর প্রতিদিনের পক্ষ থেকে উঞ্চ অভিনন্দন।
একজন খেলোয়াড়ের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার চাপ, শততম টেস্টের গুরুভার এবং দলের নাজুক পরিস্থিতি—সব মিলিয়ে প্রত্যাশার পারদ ছিল তুঙ্গে। মুশফিকের সেঞ্চুরির বাঁধভাঙা উল্লাস প্রমাণ করে দিল, এই অর্জন কেবল সংখ্যার যোগফল নয়, এটি তাঁর মানসিক দৃঢ়তা ও পরিশ্রমের ফসল।
মুশফিকুর রহিম বিশ্বের ১১তম ব্যাটার হিসেবে শততম টেস্টে সেঞ্চুরির এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেছেন। তবে তাঁর অর্জনটি আরও উজ্জ্বল কারণ, তিনি এই তালিকায় প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার। একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারে শততম টেস্ট খেলাটাই যেখানে বিশাল ব্যাপার, সেখানে এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করাটা এককথায় কিংবদন্তীর প্রতিচ্ছবি। মুশফিক প্রমাণ করলেন, চাপ কেবল পারফর্ম্যান্সকে বাধা দেয় না, বরং তা সঠিক মানসিকতার কাছে নতি স্বীকার করে।
এই সেঞ্চুরিটি তাঁর ক্যারিয়ারের ১৩তম টেস্ট সেঞ্চুরি। এর মাধ্যমে তিনি মুমিনুল হকের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ডে ভাগ বসালেন। এটি নিছক একটি সমতা নয়, এটি দীর্ঘ সময়ের ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর।
শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করে মুশফিক কেবল ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটি লেখালেন না, তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেন। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য এটি এক অনুপ্রেরণা, যা প্রমাণ করে—যোগ্যতা, পরিশ্রম আর মানসিক স্থিরতা থাকলে যেকোনো মাইলফলক ছোঁয়া সম্ভব।
মুশফিকের এই অর্জন আমাদের জাতীয় খেলা ক্রিকেটের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এটি কেবল একটি সেঞ্চুরি নয়, এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের দীর্ঘ যাত্রায় যোগ হওয়া এক ‘শতক’-এর বিজয়গাঁথা। তাঁর এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখা এবং তাঁকে আন্তরিক অভিনন্দন জানানো প্রতিটি ক্রিকেটপ্রেমীর দায়িত্ব।


