অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে উধাও ‘সোনালী ফাউণ্ডেশন’

মেহেরপুর শহরের যাদবপুর সড়কে ‘সোনালী ফাউণ্ডেশন’ নামের একটি এনজিও সংস্থা গ্রাহকদের কাছে থেকে ঋণ দেওয়ার নাম করে অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে।

মঙ্গলবার ঋণ নিতে এসে গ্রাহকরা দেখেন আসবাবপত্র নিয়ে অফিস গুটিয়ে পালিয়েছে এনজিওর কর্মকর্তারা। এসময় সেখানে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং অভিযুক্তের বিচার দাবী করেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি, যাদবপুর, শহরের হোটেল বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহক সংগ্রহ করে ঋণ দেওয়ার নামে ১০ শতাংশ করে জামানত সংগ্রহ করে সংস্থাটি।

আমঝুপির সাথি খাতুন জানান, ১০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে তার সাথে ১ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। বুধবার তার ঋণের ১০ লাখ টাকা দেওয়া কথা। কিন্তু সকালে অফিসে এসে দেখতে পান অফিসে কেউ নেই। আসবাবপত্রও নেই।

তিনি বলেন, তার স্বামীকে গোপন করে তিনি এ টাকা দিয়েছেন। তার স্বামী জানতে পারলে তাকে বাড়িতে উঠতে দেবে না। এখন পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।

একই গ্রামের হেলাল জানান তার সাথেও ১০ লাখ ঋণ নেওয়ার কথা বলে ১ লাখ নেওয়া হয়েছে, হাসিয়ারা দিয়েছেন ৪০ হাজার, শিল্পি খাতুন ৪০ হাজার, নৈতন খাতুন ৩০ হাজারসহ আমঝুপি গ্রাম থেকে ৯ জন দিয়েছেন ৪ লাখ টাকা। এসময় তাদের কাছে কোন পাসবই কিংবা কোন রশিদ আছে কিনা জানতে চাইলে বলে সংস্থাটি কিছুই দেয়নি।

যাদবপুরের সাজেদা খাতুন এক লাখ ঋণ পাবেন বলে দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা, মর্জিনা খাতুন দিয়েছেন ৫হাজার টাকা, হিরা খাতুন ৭ হাজার, আনোয়ার হোসেন ৭ হাজার টাকা। কালাচাদপুরের ভ্যান চালক আক্তার হোসেন ২ লাখ টাকা ঋণ পাবেন বলে দিয়েছেন ২০ হাজার। ঋণ নিতে এসে অফিস উধাওয়ের খবর পেয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এছাড়াও সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রাম থেকে গ্রাহকরা এসে অফিসে কাউকে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং সেখানে অবস্থান নেন।

খবর পেয়ে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের এস আই মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রাহকদের শান্ত করেন। এবং এনজিও কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় এনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি গ্রাহকদের আশ্বাস দেন।

জানা গেছে, সপ্তাহ খানেক আগে বিপ্লব নামের একজনের কাছে থেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা অফিস করেন। হঠাৎ করে দুএকদিন আসা যাওয়া করেন। আজ গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার দিনে তারা আসবাবপত্র নিয়ে উধাও হয়েছে। তবে তাদের কোন সাইনবোর্ড কখনো কেউ দেখতি পাননি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

তবে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কাজী কাদের ফজলে রাব্বী বলেন, “সোনালী ফাউণ্ডেশন নামের কোন এনজিওর অনুমোদন নেই। এক ধরণের প্রতারকরা নাম সর্বস্ব এনজিও খুলে মানুষের কাছে থেকে টাকা লগ্নি করে উধাও হচ্ছে। এদের থেকে সচেতন থাকতে হবে। তাদের কাছে টাকা দেওয়ার আগে অবশ্যই তাদের কাগজপত্র যাচাই করে নিতে হবে”।

এছাড়া জেলা সমবায় অধিপ্তরের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোনালী ফাউণ্ডেশন নামের কোন প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন তাদের দপ্তরেও নেই।